রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

Baishnabnagar | নেপথ্যে ঋণের চাপ! গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়লেন দম্পতি

শেষ আপডেট:

বৈষ্ণবনগর: গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু হল মাঝবয়সি এক দম্পতির। পরিবারের দাবি, সংসারে ছিল চরম অভাব-অনটন। সঙ্গে চেপে বসেছিল বেসরকারি সংস্থা থেকে নেওয়া ঋণের চাপ। সেই অবসাদ থেকেই গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যুর পথ বেছে নেন ওই দম্পতি। এমন ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার বীরনগর জালারদিটোলা গ্রামে।

ওই দম্পতির নাম সুজিত ঘোষ (৪২) ও সুষমা ঘোষ (৩৬)। তাঁদের কোনও সন্তান ছিল না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, একটি বেসরকারি সংস্থা ছাড়াও ওই গ্রামের বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। যে টাকা সুদে আসলে আরও দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। সেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ওই বেসরকারি সংস্থা ছাড়াও প্রতিবেশীরা চাপ দিতে শুরু করে। পরিবারের সদস্যদের অনুমান সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দেন ওই দম্পতি।

ওই দম্পতির আত্মহত্যার ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকায়। পরিবারের সদ্যদের দাবি, সুজিত খুব একটা রোজগার করতে পারতেন না। সুজিতের বাবা এনটিপিসির একজন কর্মী ছিলেন। বেশ কয়েক বছর আগে অবসর নেন। বাবা মারা যান পাঁচ বছর আগে। সুজিত তাঁর বাবার জমানো টাকা খরচ করেই বিধবা মা, স্ত্রী ও তাঁর দাদার ছেলেকে নিয়ে সংসার চালাতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সুদে টাকা নেন তিনি। সুজিতের দাদা ও বৌদি বছর সাতেক আগে মারা গিয়েছেন। তারপর থেকে ভাইপোকে সুজিত নিজের কাছেই রাখতেন। ভাইপো কাকা-কাকিমাকে বাবা-মা বলেই ডাকতেন।

সুজিতের ভাইপো গোপাল ঘোষ জানিয়েছেন, ‘দোতলায় ওপরের ঘরেই ছিলাম আমি। দশটা নাগাদ বাবা-মা উপরের ঘরে এসে আমাকে নীচে যেতে বলেন। বাবা-মা জানিয়েছিল তাঁরা ঘুমোবে। আমি নীচে যেতেই ঠাকুমা আমাকে পুজোর প্রসাদ বাবা-মাকে দিয়ে আসতে বলেন। আমি প্রসাদ নিয়ে যেতেই দেখি, ভেতর থেকে দরজা লাগানো। অনেক ডাকাডাকি করতেও গেট না খোলায় জানলা দিয়ে উঁকি দিতেই দেখি, বাবা-মা দুইজনেই ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছেন। আমি প্রতিবেশীদের ডাকাডাকি শুরু করি।’

প্রতিবেশী অভিরূপ সরকার দাবি করেন, ‘সুজিতের ভাইপো গোপালের ডাক শুনে ওদের বাড়ি যাই। এরপরেই দরজা খুলে ভেতরে ঢুকি। দেখি একটা শাড়িতে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ঝুলে রয়েছে। তড়িঘরি দুজনকে নীচে নামিয়ে আনি। দ্রুত বেদরাবাদ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাই চিকিৎসার জন্য। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।’

Sandip Sarkar
Sandip Sarkarhttps://uttarbangasambad.com/
Sandip Sarkar Reporter based in Darjeeling district of West bengal. He Worked in Various media houses for the last 22 years, presently working in Uttarbanga Sambad as Sr Sub Editor.

Share post:

Popular

More like this
Related

Jalpaiguri | নাচে জাতীয় স্কলারশিপ পেল দুই কন্যা

অনসূয়া চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়িকে গর্বিত করল দুই কিশোরী (Jalpaiguri)।...

Kaliachak | একসঙ্গে পরিবারের চার সদস্যকে খুন! দোষীকে ফাঁসির সাজা শোনাল আদালত

মালদা: একই সঙ্গে বাবা, মা, বোন, ঠাকুরমাকে খুন করে...

Kaliachak | পুলিশি অভিযানে উদ্ধার কোটি টাকার ব্রাউন সুগার! ধৃত ২

কালিয়াচক: প্রায় কোটি টাকা মূল্যের ব্রাউন সুগার সহ ২...

John Barla | ‘রাজ্যের ১০০ দিনের টাকা আটকেছে কেন্দ্র, সব জানাবো’, ডুয়ার্সে ফিরেই বিজেপিকে নিশানা বারলার

নাগরাকাটা: কেন্দ্রীয় সরকার কীভাবে এরাজ্যের ১০০ দিনের টাকা আটকেছে,...