সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: ডাইনি অপবাদে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে খুনের পর ৫ বছর ধরে গা-ঢাকা দিয়ে ছিলেন। তবে রথের মেলায় ঘুরতে আসাই হল কাল। ওঁত পেতে বসে থাকা পুলিশের জালে অবশেষে ধরা পড়ে গেলেন খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত বছর আটচল্লিশের বুধিরাম সোরেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে রথের মেলায় ঘুরছিলেন বুধিরাম। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রথমদিকে নিজের পরিচয় লুকিয়ে রাখেন ওই ব্যক্তি। তবে আধার কার্ড ও বায়োমেট্রিক পরীক্ষার পর পুলিশ নিশ্চিত হয়, যাঁকে আটক করা হয়েছে, তিনিই খুনের ঘটনায় এতদিন ধরে ফেরার ছিলেন।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বুধিরামের বাড়ি বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজাপুর গ্রামে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আত্রেয়ীর চরে দুই হাত বাঁধা অবস্থায় সোম মুর্মু নামে এক বৃদ্ধের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তৎকালীন পঞ্চায়েত প্রধান পিন্টু বসাক। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সোমকে ডাইনি অপবাদে নদীর চরে পুজোর নাম করে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছিল। একজনকে বাদ দিয়ে প্রত্যেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন বুধিরাম সোরেন।
অন্য রাজ্যে গোপন ডেরায় লুকিয়ে থাকায় পুলিশ বুধিয়ার নাগাল পাচ্ছিল না। শেষপর্যন্ত শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশের কাছে খবর আসে, বাড়ি ফিরে রথের মেলায় ঘুরতে গিয়েছেন বুধিরাম। সেখানেই হাতেনাতে ধরা পড়ে যান বুধিয়া। কিন্তু তারপরও ঘোল খাওয়াতে থাকেন তিনি। তিনিই যে বুধিয়া, তা পুলিশের সামনে প্রথমে অস্বীকার করেন। নিজেকে সৌমেন সোরেন বলে পরিচয় দেন। আসলে নিজের দাদার পরিচয় দিয়ে পুলিশকে ঘোল খাওয়ানোর চেষ্টা করেছিলেন বুধিয়া। এরপর পুলিশ ওই ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি করে। তাঁর আধার কার্ড জোগাড় করে। শেষে বায়োমেট্রিক পরীক্ষা করা হয়। তারপরেই প্রমাণিত হয় ধৃত ব্যক্তি বুধিরাম। নিশ্চিত হওয়ার পরই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।