পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: সন্ধ্যা নামতেই শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মদ্যপ বাইকচালকের দল। বেপরোয়া গতিতে অলিগলি থেকে রাজপথে চলাচল করছে তারা। পাশাপাশি কিছু টোটো, চার চাকার গাড়ির চালকও হুঁশ হারিয়ে এভাবে গাড়ি চালানোয় মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। এক সপ্তাহ আগের ঘটনা। অভিযাত্রীপাড়ায় মদ্যপ অবস্থায় এক টোটোচালক আরেকটি টোটোকে ধাক্কা মারে। পরে ওই টোটোচালককে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দিনের পর দিন এধরনের ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কে শহরবাসী।
অবশেষে ওই মদ্যপ গাড়িচালকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল বালুরঘাট ট্রাফিক পুলিশ। শনিবার রাতে ট্রাফিক পুলিশ অভিযান চালিয়ে একাধিক মদ্যপ চালককে আটক করে। তাদের গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বালুরঘাট ডিএসপি ট্রাফিক বিল্বমঙ্গল সাহা বলেন, ‘প্রায়শই আমরা বিভিন্ন এলাকায় মদ্যপ চালকদের রুখতে অভিযান চালাচ্ছি। তাদের ব্রেথালাইজার মেশিনে পরীক্ষা করা হচ্ছে। মদ্যপান করে গাড়ি চালালেই তাদের বিরুদ্ধে মোটর ভেহিকল আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ পুলিশের এই উদ্যোগে খুশি শহরবাসী।
তবে এমন পদক্ষেপ আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন অনেকে। বালুরঘাটের সাহিত্যিক দেবাশিস অধিকারীর কথায়, ‘মদ্যপ চালকদের জন্য দিন-দিন দুর্ঘটনা বাড়ছে। এক-দুদিন নয়। এই অভিযান নিয়মিত চালানো উচিত।’ একই কথা বলেন বালুরঘাটের প্রাথমিক শিক্ষক অলিন্দ চক্রবর্তী।
বালুরঘাটে শহরের পরিধি বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যাও। এর মধ্যেই মদ্যপ বাইক, টোটোচালকদের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়েছে। বিশেষ করে বাইকচালকরা বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে।
শনিবার সন্ধ্যায় মদ্যপ অবস্থায় বাইক নিয়ে শহরের রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। নজরে পড়তেই বাইকের পেছনে কিছুদূর পর্যন্ত ধাওয়া করে পুলিশ। পরে তাঁকে থানা মোড় এলাকায় আটক করা হয়। অভিযুক্তকে পাকড়াও করে ব্রেথালাইজার পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয় পুলিশ যে, ওই ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাঁকে আটক করে পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হয়। বাইকটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার এরকম আরও কয়েকজন গাড়িচালককে আটক করা হয়েছে। শহরে মদ্যপ অবস্থায় বাইক চালানো কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। দুর্ঘটনা রুখতেই শহরজুড়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে এই ধরনের তৎপরতা ভবিষ্যতেও চলবে।
ট্রাফিক পুলিশের এমন উদ্যোগে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন শহরবাসী।