সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: পাহাড় ঘেরা মনোরম দৃশ্যের মাঝে ডাল লেকে শিকারায় বসে কাওয়া-তে চুমুক। আহা! স্বর্গীয়। ভূ-স্বর্গের কথা ভাবলে এরকম একটা সুপ্ত বাসনা বা ছবি কমবেশি আমাদের সকলের মনেই ভেসে ওঠে। তবে এবার সেই শিকারা’র স্বাদ পেতে আর কাশ্মীরে (Kashmir) যাওয়ার দরকার নেই। গৌড়বঙ্গবাসীকে গৌড়বঙ্গে থেকেই শিকারা’র স্বাদ দিতে চলেছে বালুরঘাট (Balurghat)।
বালুরঘাট শহরের লাইফলাইন বলা হয় আত্রেয়ী নদীকে। পর্যটনবিহীন দক্ষিণ দিনাজপুরে এবার পর্যটনের ছোঁয়া আনতে শহরের লাইফলাইনকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। আত্রেয়ীতে খুব শীঘ্রই শুরু হতে চলেছে শিকারা পরিষেবা। মূলত পর্যটকদের আকর্ষণ কাড়তে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। আর তা তৈরি করতেই সোমবার বালুরঘাট পুরসভা, জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা ও সেচ দপ্তরের আধিকারিক আত্রেয়ী পাড় পরিদর্শন করেন। খুব শীঘ্রই এই প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্যে পাঠানো হবে জানান বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র।
প্রকল্প সম্পর্কে জানা গিয়েছে, স্বল্প উচ্চতা বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যেই নদীবক্ষে বোটিংয়ের পাশাপাশি শিকারা পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। নদীর পূর্বপাড়ে চার নম্বর ওয়ার্ড ও পশ্চিম পাড়ে রয়েছে ১৩ নম্বর ওয়ার্ড। এই দুই দিকেই সুদৃশ্য পার্ক সহ সৌন্দর্যায়নের কাজ করা হবে।
পর্যটনবিহীন জেলা হিসেবেই রাজ্যে পরিচিতি রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের। এই জেলায় পর্যটনের নতুন নতুন ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে মানুষ দাবি করে আসছে। ইকো টুরিজম সহ নানা প্রকল্পের কথা ভাবা হলেও সেগুলির বাস্তবায়ন হয়নি। সম্প্রতি বালুরঘাট পুরসভার পক্ষে আত্রেয়ীকে কেন্দ্র করে পর্যটনের একটি প্রস্তাব দেওয়া হয় রাজ্য পর্যটন দপ্তরে। আর এরপরেই বালুরঘাট পুরসভার প্রস্তাবকে লুফে নিয়ে রাজ্য সরকারের পর্যটন দপ্তরের পক্ষ থেকে আত্রেয়ীকে ঘিরে এই পর্যটন কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ইতিমধ্যেই বালুরঘাটের চকভবানী এলাকায় আত্রেয়ীর জল ধরে রাখতে স্বল্প উচ্চতার বাঁধের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সেচ দপ্তর। ওই বাঁধের উত্তর দিকে নদীতে সারাবছরই কার্যত জলের অভাব আর হয় না। ওই বাঁধের কাছেই এবারে এই নতুন নৌকা বিহারের প্রকল্প করে তুলবে রাজ্য পর্যটন দপ্তর।
চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, ‘আত্রেয়ীর দু’পাশেই সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। বসার ব্যবস্থা করা হবে। আর নদীতে নৌকা বিহারের ব্যবস্থা করা হবে।