সুবীর মহন্ত, বালুরঘাট: ফের বালুরঘাট (Balurghat) শহরে ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য প্রকাশ্যে এল। ইভটিজারদের বিরুদ্ধে পুলিশের পদক্ষেপ নিয়ে উঠে এসেছে প্রশ্ন।
সম্প্রতি বালুরঘাটের খাদিমপুর এলাকার এক বিএড কলেজ পড়ুয়ার সঙ্গে হওয়া ইভটিজিংয়ের ঘটনার তদন্তর কিনারা বা অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আর এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে শহরে টিউশন পড়তে আসা এক আদিবাসী কলেজ ছাত্রী ইভটিজিংয়ের মুখে পড়লেন। শুধু তাই নয়, শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল পুরসভার অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার সকালে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অভিযাত্রী ক্লাব সংলগ্ন এলাকায়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছাত্রীর পাশে তাঁর বন্ধুরা এসে দাঁড়াতেই ছুট লাগায় ওই অভিযুক্ত। পরে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তকে ধরে মারধর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে স্থানীয় কাউন্সিলার তথা বালুরঘাট পুরসভার এমসিআইসি বিপুলকান্তি ঘোষ। তিনি অভিযুক্তকে দু-চার থাপ্পড় মারেন। পরে পুলিশে খবর দেন তিনি। এদিকে এনিয়ে ওই কলেজ ছাত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পেতেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতের নাম বাপ্পা সরকার। বাড়ি বালুরঘাট শহরের একে গোপালন কলোনিতে।
ওই তরুণী বালুরঘাট কলেজের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী। এদিন সকালে একাই বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ড থেকে হেঁটেই কলেজ সংলগ্ন এলাকায় বাংলা টিউশন পড়তে যাচ্ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, একা পেয়ে পুরসভার ওই অস্থায়ী কর্মী পথ আটকায় কলেজ ছাত্রীর। প্রথমে মোবাইল নম্বর ও পরে ফোন চায় অভিযুক্ত। মোবাইল না দেওয়ায় ওই তরুণীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। তার শরীরে হাত দিতে শুরু করে। এতেই ওই তরুণী চিৎকার করেন এবং সহপাঠীদের ফোন করে বিষয়টি জানায়। পাশাপাশি অভিযুক্তের ছবি মোবাইল বন্দি করেন।
ওই ছাত্রীর চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এলে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। পরে সে স্থানীয় একটি হাইস্কুলে লুকিয়ে পড়ে। সেখানেই তাকে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। সেই সময় মারধরও করা হয়।
এদিকে আরজি করের রেশ কাটতে না কাটতেই বালুরঘাটে একের পর এক কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে শ্লীলতাহানির ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন শহরবাসী। মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে এবার বালুরঘাটেও প্রশ্ন উঠছে। অন্যদিকে, তদন্তের স্বার্থে পুলিশ প্রশাসনকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন বিপুলকান্তি ঘোষ।
ডিএসপি সদর বিক্রম প্রসাদ বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েই একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’ কিন্তু এতে সন্তুষ্ট নয় ওই নির্যাতিতার পরিবার। এদিন নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বলেন, ‘আমাদের ছেলেমেয়েরা কি পড়াশোনা করতে যাবে না স্কুল, কলেজে? আর এমন কাণ্ড যদি শহরেই হয়, তাহলে আমরা ছেলেমেয়েদের কাদের ভরসাতে পাঠাব?’