বালুরঘাট: বিজেপি ফেরতদের দল হয়ে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারাই পাচ্ছে পদ, পুরস্কার। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদে মেন্টর ও কোমেন্টর পদে নতুন নিয়োগকে ঘিরে জেলা তৃণমূলে কার্যত বিদ্রোহ শুরু হয়েছে।
মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র ও তাঁর অনুগামীদের নিশানা করে, ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের সদস্য মৃণাল সরকার। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তিনি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কার্যত প্রকাশ্যে এনেছেন।
দলের জেলা সহ সভাপতি এমন বিদ্রোহকে ভালো চোখে দেখছেন না তৃণমূল জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল। কার্যত তিনি মন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে মৃণাল সরকারকে শোকজ করবেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র তথা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি অম্বরীশ সরকারও মৃণালের ওই প্রকাশ্যে ফেসবুক পোস্ট করাকে সমর্থন না করলেও, তিনিও যে ক্ষুদ্ধ তা তিনি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হেরে যাবার পর, অর্পিতা ঘোষ বনাম বিপ্লব মিত্রের সরাসরি লড়াই দেখেছে দক্ষিণ দিনাজপুর। ওই বছরেই বিপ্লব মিত্র সহ তৎকালীন জেলা পরিষদের আরও প্রায় ১০ জন সদস্য দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করে। জেলা পরিষদ হাতছাড়া হয়েছিল তৃণমূলের। তবে সেই সময় অর্পিতা ঘোষই তৃণমূলকে ঘুরে দাঁড় করিয়েছিলেন। জেলা পরিষদও তৃণমূলের দখলে এনেছিলেন।
তবে সেসব আড়ালে আবডালে অভিযোগ করলেও, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের মেন্টর শংকর সরকার ও কোমেন্টর পদে শিপ্রা নিয়োগী পালের নিয়োগই ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ নেতাদের। এবারে প্রকাশ্যে ওই অভিযোগ তুলেছেন বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা মৃণাল সরকার। সোশ্যাল মিডিয়ায় দিল্লিতে বিজেপি যোগ দেওয়ার দিনের একটি ছবি পোস্ট করে সেখানে, উপস্থিত নেতাদের বর্তমান পদের উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ওই দিন দিল্লি বিজেপি অফিসে উপস্থিত থাকা বিপ্লব মিত্র বর্তমানে মন্ত্রী। চিন্তামণি বিহা সভাধিপতি। ওই ছবিতে থাকা শংকর সরকার, শিপ্রা নিয়োগী, লিপিকা সরকার, মফিজউদ্দিন মিয়াঁ সহ আরও অনেকেই নানা পদে রয়েছেন। আর এসব বিজেপিতে যাওয়ার পুরস্কার।
বিক্ষুব্ধ নেতা মৃণাল সরকার উত্তরবঙ্গ সংবাদকে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, ‘যারা বিজেপিতে যায়নি, জয় শ্রীরাম বলেনি, তাদের কোনও পদ জুটছে না। প্রাক্তন জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা অভিজ্ঞতা থাকা ললিতা টিগ্গা, মিঠু জোয়ারদাররা যেহেতু সেই সময় তৃণমূলটা আঁকড়ে ধরেছিল, তাই তাদের এখন কোন পদ জুটছে না।’তৃণমূল জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল বলেন, ‘এটা তো দলকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ করা। এসব পদ এখান থেকে ঠিক হয় না, সবই রাজ্য থেকে ঠিক করে পাঠানো হয়। উনি তো দলের রাজ্য নেতাদের সিদ্ধান্তকেই চ্যালেঞ্জ করেছেন। কেন এমন করেছেন, জানতে চাওয়া হবে।’