বালুরঘাট: বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই রমরমিয়ে চলছে জলের কারখানা। সেই জল বোতল ও ড্রামে বন্দি করে বিক্রি হচ্ছে শহর ও গ্রামের বিভিন্ন দোকান ও বাড়িতে। সাধারণ মানুষও চোখ বন্ধ করে সেই জল পান করছেন। এমন বেআইনি জলের কারখানা চালানোর কথা গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযানে নামে ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর। বৃহস্পতিবার এরকমই ছয়টি জলের কারখানায় হানা দিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। পাঁচটিরই নেই লাইসেন্স। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাগজপত্র ঠিক না করলে কারখানা বন্ধ করা হবে বলে ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, এদিন বালুরঘাটের (Balurghat) মাছ, মাংস ও সবজির দোকানে হানা দিয়ে ওজন যন্ত্রের গরমিল থাকায় তা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
শহর ও পার্শ্ববর্তী গ্রামাঞ্চলে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে জলের কারখানা। যেখানে কার্যত আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জল প্রক্রিয়াজাত করে ড্রামে ভরা হচ্ছে। সেগুলি পরে বিভিন্ন বাড়ি, হোটেল ও রেস্তোরাঁয় সরবরাহ করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে আসছিল ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের কাছে।
এদিন ডিস্ট্রিক্ট কনজ্যুমার প্রটেকশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তথা জেলা শাসকের নির্দেশে খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিক, লিগাল মেট্রলজি ও পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের সঙ্গে বালুরঘাটের গঙ্গাসাগর, ভুসিলা, হিলি মোড় সহ মোট ছয়টি জলের কারখানায় আচমকা হানা দেয় ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর। যেখানে একটি কারখানার নথিপত্র পাওয়া গেলেও অন্য পাঁচটিতে জল তোলা, প্রক্রিয়াজাত করার কোনও লাইসেন্স পাননি আধিকারিকরা। এদিনই সেগুলি বন্ধ করে দিতে উদ্যত হন আধিকারিকরা। পরে তাঁদের নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে আগামীতে লাইসেন্স ছাড়া কারখানা চললে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এদিন বালুরঘাটের মাছ ও মাংসের দোকানে হানা দিয়ে পাল্লা বাটখাড়ায় গরমিল পেয়েছেন আধিকারিকরা। গৌড়ীয় মঠ এলাকায় মাংসের দোকান থেকে ওজন যন্ত্র ও বাজারের কিছু বাটখারা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের সহ অধিকর্তা বিধানচন্দ্র ঘরামি বলেন, ‘এমন অনেক জলের কারখানা রয়েছে যাদের লাইসেন্স নেই। আমরা ভুশিলা, গঙ্গাসাগর সহ বেশ কিছু এলাকায় এমন খোঁজ পেয়েছি। সেখানে তারা ইট গেঁথে টিনের আচ্ছাদন দিয়ে গুদামঘরের মতো তৈরি করে রেখেছেন। সেই কারখানায় কোনও লাইসেন্স ছাড়াই জলের মেশিন বসিয়ে কাজ চলছে। তারা আমাদের প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে পারেননি। নিয়ম না মানলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে। বাজারের কিছু ওজন যন্ত্রে গরমিল থাকায় সেগুলিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’