সুবীর মহন্ত ও রূপক সরকার, বালুরঘাট: চিকিৎসক সংকট থেকে বেড সংকট। বছরের শেষে প্রবল সমস্যা দেখা দিয়েছে জেলার অন্যতম বড় স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। একদিকে চিকিৎসক সংকটের মাঝেই আরও ৫-৬ জন চিকিৎসকের সংখ্যা কমতে পারে কিছুদিনের মধ্যে। পাশাপাশি হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড ও প্রসূতি বিভাগের বেড সংকটে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
অনেক বিভাগে দুটি বেডে তিনজনকে পর্যন্ত রাখতে হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। শীতের মরশুমে আচমকা রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায়, নিয়ম অনুযায়ী যে বেড থাকার কথা তাঁর থেকেও বেশি বেডের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। বেশ কিছুদিন ধরেই বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে চিকিত্সক সংকট তীব্র। প্রায় সব বিভাগে ৫০ শতাংশ চিকিৎসক নিয়ে ভুগতে হচ্ছে। অনেক বিভাগে নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসক। ফরেন্সিক বিভাগের চিকিৎসক ছাড়াই চলছে জেলা হাসপাতালের মর্গ। চিকিৎসক সংকটের মধ্যেই এবার নতুন করে একঝাঁক চিকিৎসক হাসপাতাল ছাড়তে চলেছেন। কেউ অবসর গ্রহণ করছেন। আবার কেউ উচ্চশিক্ষার জন্য হাসপাতাল ছেড়ে পড়াশোনার জগতে ফিরছেন।
নাক-কান-গলা, সিসিইউ, চক্ষু বিভাগ, জিডিএমও সহ নানা বিভাগ থেকে চিকিৎসকরা অবসর গ্রহণ বা উচ্চশিক্ষার জন্য অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। ফলে জরুরি বিভাগ থেকে শুরু করে ওয়ার্ড এবং বহির্বিভাগের চিকিৎসা পরিষেবা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলেই আশঙ্কা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাই তড়িঘড়ি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যাপ্ত চিকিৎসক আনার জন্য জানানো হয়েছে।
বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দুবিকাশ বাগ বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট থাকলেও যারা আছেন, তাদের নিয়েই আমরা সুষ্ঠুভাবে পরিষেবা দিচ্ছি। রোগীর চাপও সামাল দেওয়া হচ্ছে।’
শুধুমাত্র মেডিসিন বিভাগ নয় সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে থাকা প্রসূতি বিভাগেও একইরকম অবস্থা। সিজার করার পর দুটি বেড মিলিয়ে তিনজন বা চারজনকে থাকতে হচ্ছে। এরফলে রোগীরা ব্যাপক সমস্যায় পড়ছেন। অন্য সময় ২০০ থেকে ২৫০ জন রোগী প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকে। বর্তমানে সেই সংখ্যা ৪০০ পেরিয়ে গেছে। শীতে শ্বাসকষ্ট, সর্দি, জ্বর নিয়ে বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছেন। যারা খুব ক্রিটিক্যাল তাদের সিঙ্গল বেডে রাখা হচ্ছে। আর যারা একটু সুস্থ রয়েছে তাদের দুজন করে রাখা হচ্ছে।
মালঞ্চার বাসিন্দা এক রোগীর আত্মীয় কোমল বর্মন বলেন, ‘আমার ডেলিভারি পেশেন্ট ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে। এক বেডে দুজন করে রাখা হচ্ছে। সিজার করার পর এক বেডে দুইজন রোগী কীভাবে থাকতে পারে।’