পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: বালুরঘাট-হিলি রেলপথ সম্প্রসারণে প্রচুর গাছ কাটা পড়লেও সেই অনুপাতে বৃক্ষরোপণ হচ্ছে না বলে পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শনিবার রেল ও জেলা শাসকের দপ্তর ছাড়াও জেলা পরিষদে এই অভিযোগ জানিয়েছে।
মোট ৫৭টি গাছ কাটা পড়েছে নির্মীয়মাণ ওই রেলপথের ধারে। সবগুলিই গাছ অযোধ্যা গ্রামের। সেগুলির মধ্যে আকাশমণি, ইউক্যালিপ্টাস ইত্যাদি গাছ রয়েছে। রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক ভূপেন বিশ্বকর্মার কথায়, যত গাছ কাটা হবে, তার পাঁচগুণ গাছ রোপণের শর্তেই রেল দপ্তরকে গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তাছাড়া শুধু গাছ রোপণ করলে হবে না, পাঁচ বছর পর্যন্ত গাছগুলির রক্ষা করার দায়িত্বও রেলের। নিয়ম মেনে সেই কাজ না হলে পদক্ষেপ করা হবে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অম্বরীশ সরকারও বলেন, ‘রাস্তা সম্প্রসারণ বা উন্নয়নের কাজে গাছ কাটা পড়লে নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে বৃক্ষরোপণ করা উচিত। রেল সেই নিয়ম না মানলে জেলা শাসকের সঙ্গে কথা বলব।’ ১৫ বছরের চেষ্টায় ওই রেলপথের জন্য জমি অধিগ্রহণের জট কেটে যাওয়ায় প্রায় ৩৮৬ একর জমি রেলের হাতে তুলে দিয়েছিল প্রশাসন।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জলকিশোর শর্মা অবশ্য বলেন, ‘নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই কাজ করা হবে। তবে একটু সময় প্রয়োজন। ওখানে কী সমস্যা আছে দেখতে হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছি।’ রেললাইন হোক, কিন্তু পরিবেশ ধ্বংস করে নয়- এখন এই দাবি উঠছে অযোধ্যা গ্রামে।
বালুরঘাট ব্লকের খরাইল গ্রাম থেকে অযোধ্যা যাওয়ার মূল রাস্তার দুই ধারে গাছ কাটার ছবি ধরা পড়েছে। সারি সারি গাছের অবশিষ্ট অংশ পড়ে রয়েছে। গাছ কাটা হলেও নিয়ম মেনে বৃক্ষরোপণ করা হয়নি বলে পরিবেশকর্মীরা ক্ষুব্ধ। তাঁদের দাবি, এই রাস্তা দিয়ে অনেক মানুষের নিত্যদিন যাতায়াতের সময় গাছগুলি শুধু ছায়া বা অক্সিজেন দিত। এলাকার জীববৈচিত্র্য রক্ষাতেও গাছগুলির ভূমিকা আছে। গাছগুলি কাটায় ওই অঞ্চল শুষ্ক হয়ে গেলে আগামীতে বিপদ বাড়বে।