সৌরভ রায়, ফাঁসিদেওয়া: গ্রামবাসীরা একজোট। দেশের নিরাপত্তায় আঁচ এলে বিএসএফের (BSF) সঙ্গে এক হয়ে লড়াইয়ে তৈরি শিলিগুড়ি মহকুমার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গ্রাম ফাঁসিদেওয়ার (Phansidewa) বন্দরগছ তথা পুরোনো হাটখোলার বাসিন্দারা। সীমান্তকে যাঁরা সুরক্ষিত রাখছেন তাঁদের পাশে দাঁড়াতে তাঁরা তৈরি। একইসঙ্গে অবিলম্বে উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই বিএসএফ সব খোলা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া শুরু করেছে। মালদায় বাধা দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (BGB)। তখনই গ্রামবাসীরা বিএসএফের পাশে গিয়ে দাঁড়ান৷ চাপের মুখে পিছু হটে বিজিবি। এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে শিলিগুড়ির এই গ্রামেও। উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতার দিতে সমস্যায় পড়ছে বিএসএফ।
ফাঁসিদেওয়া ব্লকে লালদাসজোত থেকে হাপতিয়াগছ পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত রয়েছে আন্তর্জাতিক সীমান্ত। মহানন্দার এক পাড়ে ভারত অন্যপাড়ে বাংলাদেশ। একদিকে ফাঁসিদেওয়া উলটোদিকে বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার কাশেমগঞ্জ। উভয় দিকেই ঘন জনবসতি। স্থানীয় ধনিয়া মোড়ে তিন কিলোমিটার এবং চটহাটের মুড়িখাওয়ায় দেড় কিলোমিটার সীমান্ত উন্মুক্ত। এখানেই কাঁটাতার বসানো নিয়ে সমস্যা।
গত কয়েকমাস থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতেই বিএসএফের তরফে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই ধনিয়া মোড় এলাকাতেই উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে গোরু পাচার এবং অনুপ্রবেশ রুখতে ২০২৪-এর অগাস্টে পাঁচ ফুট উঁচু পিলার বসানো হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, বহুবার বিজিবি বাধা দিয়েছে। হয়েছে একাধিকবার দু’দেশের ফ্ল্যাগ মিটিং। তবুও সমস্যা মেটেনি।
ইতিমধ্যে পুরোনো হাটখোলা অবধি কাজ প্রায় শেষ। বাকি আরও খানিকটা কাঁটাতার বসানোর কাজ। এরইমধ্যে মালদার ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এতে একদিকে যেমন এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের সম্ভাবনা কমবে তেমনই, এই করিডর করে দীর্ঘদিনের গোরু পাচারও বন্ধ হবে। এ ব্যাপারে পুরোনো হাটখোলার বাসিন্দা উৎপল বিশ্বাস জানান, ২০০৬ সালে এই সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। গুলিও চলে। তখনও বিএসএফকে সবরকম সাহায্য করা হয়েছিল। এবারও তাঁদের পাশেই থাকছি। কাঁটাতারের বেড়া বসাতে সব রকম সহযোগিতা করা হবে।
ফাঁসিদেওয়ার চন্দনকুমার রায়ের মন্তব্য, ‘আমরা চাই, দ্রুত কাঁটাতারের বেড়া বসানো হোক। বিএসএফ চেষ্টা করছে। আমরা সঙ্গেই রয়েছি।’ নিগম দেবনাথ বললেন, ‘যে কোনও মূল্যে এই সীমান্তে কাঁটাতারের কাজ শেষ হওয়া জরুরি। আমাদের দেশের জমিতে এসে অন্য দেশের সীমান্তরক্ষী বাধা দিলে আমরা তা মানব না।’