উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। বিক্ষোভ, আগুন জ্বলছে সর্বত্র। রবিবার একদিনে সেখানে ৯৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সেখানে আওয়ামি লিগের (Awami League) সদস্যদের ওপরে জায়গায় জায়গায় হামলা চালানো হয়েছে। অন্তত ১৪টি জায়গায় মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলের সাংসদদের ওপর হামলা হয়েছে। দেশজুড়ে আওয়ামি লিগের অন্তত ২০টি কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ৩৯টি জেলায় শাসকলদল আওয়ামি লিগের সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছে বিক্ষোভকারীদের হামলায়।
প্রায় ১১টি জেলায় থানা, জেলা প্রশাসনের কার্যালয়, সরকারি ভবন, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে গত শনিবার চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাড়িতে হামলা হয়। কুষ্টিয়ায় আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। চাঁদপুর শহরের জে এম সেনগুপ্ত রোডে অবস্থিত সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনির বাড়িতে এবং চাঁদপুর পুরসভা কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। শহরের কালীবাড়ি পুলিশ বক্সে ও জেলা আওয়ামি লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়।
বরিশাল নগরের নবগ্রাম রোডে জলসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য জাহিদ ফারুকের বাড়িতে হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা। বাড়ির ভেতরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। বাড়ির সামনে বেশ কয়েকটি মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।
দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। একই সময়ে হুইপের বাড়ির সামনে পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও ছররা গুলি নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করেছে। পুলিশের ছররা গুলির আঘাতে অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর মিলেছে। গতকাল দিনাজপুর শহরের হাসপাতাল মোড় এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
হবিগঞ্জে বিক্ষোভকারীরা আওয়ামি লিগ ও ছাত্রলিগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দিলে তাঁরা জেলা আওয়ামি লিগ সভাপতি ও হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য মহম্মদ আবু জাহিরের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। সিরাজগঞ্জ পুর শহরের খেদন সরদার মোড় ও স্টেশন সড়ক এলাকায় ছাত্রলিগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। নীলফামারীতে বিক্ষোভকারীরা সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরের বাসভবন, আওয়ামি লিগের কার্যালয়ে ভাঙচুর করে। পুলিশ তাঁদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
টাঙ্গাইলে কালীবাড়ি সড়কের মোড়ে আন্দোলনকারীদের মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীরা পূর্ব আদালতপাড়ায় টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসানের (ছোট মনির) বাসভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন। রাজশাহিতে মোহনপুর থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খুলনা মহানগরের লোয়ার যশোর রোডের শঙ্খ মার্কেট এলাকায় অবস্থিত খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামি লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা।