এএইচ ঋদ্ধিমান, ঢাকা: বাংলাদেশের নানা উন্নয়ন প্রকল্পে চিনের আগ্রহ অনেকদিনের। এ ব্যাপারে ভারতকে টেক্কা দিতে মরিয়া বেজিং। তিস্তা নদীতে প্রকল্প (Teesta Project) রূপায়ণে সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের মন্তব্যেও সে রকম আভাস মিলল। চলতি মাসের ৮ তারিখ চিন সফরে যাওয়ার কথা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী (Bangladesh PM) শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina)। তার আগে বৃহস্পতিবার ঢাকায় চিনা (China) রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ।
তিনি বলেছেন, ‘তিস্তা বাংলাদেশের নদী। নিজের দেশের অংশে তারা যে কোনও প্রকল্প বাস্তবায়িত করতেই পারে। তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছে চিন। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ।’ মাত্র কিছুদিন আগে ভারত সফর সেরে ফিরেছেন হাসিনা। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে তাঁকে ভারতের আগ্রহের কথা জানানো হয়েছিল সেই সফরে। প্রকল্পটি রূপায়ণের লক্ষ্যে ভারত একটি বিশেষজ্ঞ দল বাংলাদেশে পাঠাবে বলে ঠিক হয়েছিল তখন।
এই আবহে হঠাৎ চিনা রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। শেষপর্যন্ত ভারত না চিন, বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্প কার হাত ধরে বাস্তবায়িত হবে তা নিয়েই এই চর্চা। যদিও এ ব্যাপারে ধোঁয়াশা বজায় রেখেছে ঢাকা। তবে চিনা রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য হাসিনা সরকারকে তিস্তা প্রকল্পের ব্যাপারে পরোক্ষে ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণ’-এর বার্তা বলে কেউ কেউ মনে করছেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চিন সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, ঋণ, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিসিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্প, রোহিঙ্গা সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ছাড়াও দু’দেশের বহুমুখী সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা। তার আগে ঢাকায় বৃহস্পতিবার ‘ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চিনা রাষ্ট্রদূত ওয়েন ওই মন্তব্য করেন।
পাশাপাশি হাসিনার চিন সফর দু’দেশের সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন। তাঁর কথায়, এই সফরে চিন ও বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। চিনা রাষ্ট্রদূতের আশ্বাস, ‘ব্রিকসের সদস্য হতে বাংলাদেশকে চিন সাহায্য করবে।’ রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরত পাঠাতে চিন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একজোট করার চেষ্টা করছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
ওয়েনের বক্তব্য, চিন, বাংলাদেশ ও মায়ানমার সরকার একযোগে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের চেষ্টা করছে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত বছর সেপ্টেম্বরে মায়ানমারে সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় রোহিঙ্গাদের সেখানে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়।