উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: যত সময় যাচ্ছে পরিস্থিতি ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে। কোটা বিরোধী আন্দোলনে জ্বলছে বাংলাদেশ (Bangladesh Quota Protest)। এই পরিস্থিতিতে অশান্ত বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে শুক্রবার ৩০০-রও বেশি ভারতীয় পড়ুয়া (Indian Students) দেশে ফিরে এলেন। জানা গিয়েছে, সংঘর্ষে ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে পদ্মাপারে। বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন সূত্রে জানা যাচ্ছে, কোটা বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত ১০০-এর বেশি মৃত্যু হয়েছে। আহত ২৫০০ জনের বেশি। পরিস্থিতির মোকাবিলায় ইতিমধ্যে কার্ফিউ জারি করেছে শেখ হাসিনার সরকার। নামানো হয়েছে সেনাও। তবে পরিস্থিতি সেই তিমিরেই।
ফিরে আসাদের মধ্যে বেশিরভাগই ডাক্তারি পড়ুয়া। তাঁদের অধিকাংশই ভারতের উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, মেঘালয় এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে, গতকাল ত্রিপুরার আগরতলার কাছে আখুরাতে আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর এবং মেঘালয়ের ডাউকিতে আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন পড়ুয়ারা। অন্যদিকে শুক্রবারই কোচবিহারের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মেখলিগঞ্জ গেট দিয়ে বাংলাদেশের রংপুর মেডিকেল কলেজের ৩৩ জন ছাত্রছাত্রী ভারতে প্রবেশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছ’জন ভারতীয়, ১৮ জন ভুটানের এবং নেপালের ৯ জন পড়ুয়া রয়েছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও না কোনও কোর্স করছিলেন তাঁরা। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই আপাতত দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পড়ুয়ারা। পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন।
ভারতে ফিরে পড়ুয়ারা জানান, বাংলাদেশের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রথমে আন্দোলনের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরও তাঁরা কিছুদিন থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতির ক্রমে অবনতি হয়। একসময় পরিস্থিতি এমন হয় যে, ভারতে পরিবারের সঙ্গেও তাঁরা যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। নানা বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছিল। তারপরই দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। যোগাযোগ করা হয় ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে। বিক্ষোভের মাঝে বাংলাদেশে ট্রেন, মেট্রো পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সড়কপথে গাড়ি করে সীমান্ত পেরিয়েছেন পড়ুয়ারা।
সংরক্ষণ ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভ চলছে বাংলাদেশে। গত সোমবার থেকে ক্রমে পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (Dhaka university) ঝামেলা শুরু হয়। পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন অন্যমাত্রা নেয়। গর্জে ওঠে বাংলাদেশের নানা প্রান্তের পড়ুয়ারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং ভুয়ো খবর ছড়ানো বন্ধ করতে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। এই পরিস্থিতিতে গতকাল দেশজুড়ে কার্ফিউ জারি করেছে বাংলাদেশ সরকার।