নাগরাকাটা : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে কালচিনির সুভাষিণী চা বাগানের সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন বলে জানালেন জন বারলা। আগামী ২৩ জানুয়ারি ওই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। বর্তমানে বারলা স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য দিিল্লতে রয়েছেন। সোমবার টেলিফোনে তিনি বলেন, ‘আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের তরফে ওই সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে সেখানে থাকবেন। তাই অবশ্যই যাব। তাঁর কাছে চা শ্রমিকদের পিএফ, গ্র্যাচুইটি, জমির পাট্টা সহ বিভিন্ন ইস্যু ও উন্নয়নের নানা বিষয় তুলে ধরতে চাই।’
তবে কি প্রাক্তন সাংসদ বিজেপি ছাড়ছেন? এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর বারলা দেননি। খানিকটা হেঁয়ালি রেখেই তাঁর জবাব, ‘এটা তো কোনও দলের কর্মসূচি নয়। সরকারি অনুষ্ঠান। আমার টিম রয়েছে। যা করার তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই করব।’ এদিনও বারলা বিজেপির প্রতি তোপ দাগতে ছাড়েননি। তাঁর কথায়, ‘বিজেপি আদিবাসীদের সঙ্গে ছলনা করেছে। শুধু তাদের ব্যবহার করেছে। চা শ্রমিকদের ঠকিয়েছে।’
বিজেপির আলিপুরদুয়ারের বর্তমান সাংসদ মনোজ টিগ্গার জবাব, ‘কে কোন অনুষ্ঠানে বা সভায় থাকবেন সেটা তাঁর নিজস্ব ব্যাপার। তবে একটা কথা বলতে পারি, যতটা কম সময়ের মধ্যে আমাদের দল বারলাকে সর্বভারতীয় পরিচিতি দিয়েছে তা অন্য কোনও দলের ক্ষেত্রে কল্পনার অতীত। তিনি না বুঝলে আমাদের আর কী-ই বা করার আছে। আসলে এবারের নির্বাচনে টিকিট না পাওয়াতেই তাঁর এমন ক্ষোভ। মানুষ সব বোঝে।’
রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়নমন্ত্রী বুলু চিকবড়াইক বলেন, ‘জন বারলা তৃণমূলে যোগ দেবেন কি না আমার জানা নেই। তবে একথা হলফ করে বলা যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসী সমাজসেবীদের প্রতি বরাবরই সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করে থাকেন। বারলা সরকারি অনুষ্ঠানে আসতেই পারেন। এটা তো খুবই ভালো।’
মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ গিতে বারলা ২২ জানুয়ারি দিিল্ল থেকে তাঁর লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানের বাড়িতে আসবেন। ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ২৪ তারিখ ফের দিিল্ল ফিরবেন। ২২ তারিখ নিজের অনুগামীদের সঙ্গে তঁার আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। এদিন তিনি বলেন, ‘মানুষ উন্নয়ন চায়। তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার কর্তব্য। দিিল্ল থেকে তো ডুয়ার্স, চা বাগানের জন্য কোনও বরাদ্দই আসছে না। যা করার রাজ্যই করছে। তাছাড়া আমি বসে থাকার লোক নই। মানুষ আমার পাশে রয়েছে। কাজ তো করতেই হবে।’
বিজেপির প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁর সংযোজন, ‘ওই দলের ঝান্ডা চা বাগানে আমাদের টিমই গেড়েছিল। মানুষ আমাদেরই চেনে। অন্যকে টিকিট দিয়ে এখন আমাকে সাইড লাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ আরও একধাপ এগিয়ে তঁার ক্ষোভ, ‘প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন আলিপুরদুয়ারে রেলের হাসপাতাল তৈরির সবকিছু চূড়ান্ত করার পরও তা বিজেপির একাংশ আটকে দিল। মানুষ এসব ভালো চোখে নেয়নি। তাই ওদের পাশেও এখন কেউ নেই।’
স্বাভাবিকভাবেই বারলার তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে চর্চার অন্ত নেই ডুয়ার্সের রাজনৈতিক মহলে।