শিলিগুড়ি: পুরনিগমের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্রাত্য মাধ্যমিকে শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলায় মেয়েদের মধ্যে সেরা ছাত্রী। পুরনিগমের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রায় সাড়ে সাতশো জনের তালিকায় নামই নেই মুরালীগঞ্জ হাইস্কুলের মেধাবী ছাত্রী জ্যোতি ওরাওঁয়ের। মেয়েদের মধ্যে সেরা হয়েও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে থাকতে না পেরে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ এই মেধাবীর। যদিও পুরনিগমের শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদ শোভা সুব্বার সাফাই, ‘পুরনিগমের আওতায় থাকা স্কুলগুলোর মেধাবীদের সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। বাগডোগরা বালিকা বিদ্যালয় ও আঠারোখাই বালিকা বিদ্যালয় থেকে কৃতীদের নামের তালিকা আমাদের পাঠানো হয়েছিল। সেইমতো শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার সেরার তালিকা করা হয়েছে।’
যদিও বাস্তব চিত্রটা হল, শুধু পুরনিগমের আওতায় থাকা স্কুল নয়, শনিবার শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে সেরার তালিকায় প্রথম তিনে স্থান পাওয়া ছাত্র ও ছাত্রীদের সংবর্ধনা জানানো হয়েছে।
এবারের মাধ্যমিকে ৬৫১ নম্বর পেয়ে শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম হয়েছে মুরালীগঞ্জ হাইস্কুলের ছাত্রী জ্যোতি ওরাওঁ। অথচ এদিন সংবর্ধনাপ্রাপকদের মধ্যে নাম নেই জ্যোতির। যদিও ৬৪৬ নম্বর পাওয়া বাগডোগরা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী অন্মেষা ঘোষ, ৬৪৪ পাওয়া আঠারোখাই বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী দীপিকা রাউতের নাম রয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, যদি শুধু পুরনিগমের আওতায় থাকা স্কুলগুলোর সেরা ছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় তাহলে এই দুই স্কুলের নাম এল কীভাবে? এনিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুরালীগঞ্জ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ডঃ সামসুল আলম। তাঁর বক্তব্য, ‘শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার মেয়েদের মধ্যে প্রথম তিনজনকে যখন সম্মানিত করা হচ্ছে, তখন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে তথ্য নিলেই সঠিক তথ্য পাওয়া যেত।’ তাঁর সংযোজন, ‘শুধু শিলিগুড়ি পুরনিগমের আওতায় থাকা স্কুলগুলোর কৃতীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়ে থাকলে শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার সেরা কেন বলা হচ্ছে? আর যদি শিক্ষা জেলার সেরাদের সংবর্ধনা বলা হয়, তাহলে জ্যোতি কীভাবে বাদ গেল?’
দীনবন্ধু মঞ্চে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এদিন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পাশাপাশি আইসিএসই, আইএসসি, সিবিএসই, মাদ্রাসা পরীক্ষার দশম ও দ্বাদশের কৃতীদের সংবর্ধনা জানানো এছাড়াও দার্জিলিং জেলায় ইউপিএসসি ও ডব্লিউবিজেএস পরীক্ষায় র্যাংক করা কৃতীদেরও সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে চলতি বছরের পদ্মশ্রীপ্রাপক ডঃ একলব্য শর্মাকে সংবর্ধনা জানান মেয়র গৌতম দেব। উপস্থিত ছিলেন পুরনিগমের চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তীও। সেইসঙ্গে এদিন পুরনিগম পরিচালিত অবৈতনিক কোচিং ক্লাস ‘আলোর দিশারি’ থেকে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ পড়ুয়াদেরও সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন অগ্নীশ্বর বসু ও সম্পৃতা আচার্য।