উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর বাইরে যে গ্রহ নিয়ে মানুষের আগ্রহের অন্ত নেই তা হল মঙ্গল (Mars)। মঙ্গল গ্রহে জলের উপস্থিতি নিয়ে চলছে লাগাতার গবেষণা। তাই বার বার মঙ্গলের রহস্য উদঘাটনে পৃথিবী থেকে মহাকাশযান পাড়ি দেয় মহাশূন্যে। তবে সম্প্রতি অন্য আরও একটি কারণে চর্চায় পৃথিবীর পড়শি এই গ্রহ। তা হল আমেদাবাদের ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি (পিআরএল) মঙ্গলের বুকে সম্প্রতি ৩টি অজানা গর্ত আবিষ্কার করেছেন (Mars Craters)। আর সেই গর্তগুলির নামকরণ করা হয়েছে ‘লাল’, ‘মুরাসান’ ও ‘হিলসা’। মঙ্গল গ্রহের থারসিস আগ্নেয়গিরি অঞ্চলে (Tharsis volcanic region) এই ৩টি গর্তের অবস্থান লক্ষ্য করা গিয়েছে। ফিজিক্যাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির তরফে সবচেয়ে বড় ৬৫ কিমি চওড়া গর্তটির নাম পিআরএলের (PRL) প্রাক্তন ডিরেক্টর দেবেন্দ্র লালের নামে রাখার আর্জি জানানো হয়। বাকি ১০ কিমি চওড়া দুটি গর্তের নাম উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের ২টি শহর মুরাসান ও হিলসার নামে রাখার প্রস্তাব পাঠানো হয়। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন এই প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। জানা গেছে, অধ্যাপক দেবেন্দ্র লাল ১৯৭২ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত পিআরএলের ডিরেক্টর ছিলেন। তিনি একজন মহাজাগতিক রশ্মি পদার্থবিদ ও গ্রহ বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত।
পিআরএলের বর্তমান ডিরেক্টর অনিল ভরদ্বাজের জন্মস্থান মুরাসান (Mursan)। সেই সূত্রে অন্য একটি গর্তের নাম মুরাসান রাখা হয়েছে। আর বাকি আরও একটি গর্তের নামের সঙ্গে যোগ রয়েছে এই নতুন গর্ত আবিষ্কারকারী দলের সদস্য রাজীব রঞ্জনের। তাঁর জন্ম বিহারের হিলসা শহরে। সেই মতো তৃতীয় গর্তটির নাম রাখা হয়েছে ‘হিলসা’ (Hilsa)। এই গর্ত দুটিই ১০ কিমি চওড়া। এই ৩টি গর্তের আবিষ্কারের বিশেষ বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব রয়েছে। ‘লাল’ (Lal) গর্তটির পুরো এলাকা লাভায় আচ্ছাদিত। কিন্তু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় গর্তের তলায় পলির আস্তরণের তথ্য সামনে এসেছে। যা কিনা মঙ্গল গ্রহের বুকে জলের অস্তিত্বকে প্রমাণ করে। এই গর্তের আবিষ্কার গভীর বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব বহন করে। পিআরএল ডিরেক্টর অনিল ভরদ্বাজ জানিয়েছেন, এটি গ্রহের ভূতাত্ত্বিক ইতিহাস এবং প্রাণের আশ্রয়ের সম্ভাবনা উন্মোচনের লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সম্প্রতি পিআরএল টিমের এই সাফল্যের কথা অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে।