শিলিগুড়ি: এযেন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা। গজরাজের পায়ের তলায় পড়লে যে মৃত্যু কার্যত অনিবার্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সুকনা থেকে মধুবন পার্কের দিকে যাওয়ার রাস্তায় মঙ্গলবার হাতির পালের মুখে পড়ে গিয়ে বরাতজোরে প্রাণে বাঁচলেন দুই বাইক আরোহী।
সুকনা থেকে মধুবন যাওয়ার রাস্তার মাঝে বনে ঘেরা প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন জায়গা হাতির করিডর হিসেবে পরিচিত। বন দপ্তরের তরফে পথচলতি মানুষদের সাবধান করতে বিভিন্ন জায়গায় হাতি করিডর উল্লেখ করে বোর্ড লাগানো হয়েছে। কিন্তু সেই বোর্ড দেখেও অনেকেই না দেখার ভান করে চলে যান। মঙ্গলবার বিকেলে একটি হাতির দল তাদের সেই নিজস্ব রাস্তার কথা যেন মনে করিয়ে দিল।
জঙ্গল থেকে বেরিয়ে রাস্তার পার হওয়ার জন্য বিকেলে তখন তৈরি হচ্ছিল একদল হাতি। ছোট, বড় মিলিয়ে দলে প্রায় ১৫টি হাতি ছিল। পথ পারাপারের জন্য সুরক্ষিত কী না তা দেখার জন্য তখন রাস্তার এক কোনে দাঁড়িয়ে একটি হাতি এদিক ওদিক তাকাছে। দূর থেকে অতিকায় হাতির সুরটি ততক্ষণে অনেকেই দেখে নিয়েছেন। অনেকটা দূরে তাঁরা নিজেদের যানবাহন দাঁড় করিয়ে হাতির দলটির রাস্তা পার হওয়ার অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু এক এক করে যখন রাস্তা পার হওয়ার জন্য হাতিগুলি বেরিয়ে আসছিল তখন হঠাৎ করে একটি বাইকের আগমন। চালক সহ তাতে একজন আরোহী। দ্রুতগতি বাইকটি হাতির দলটিকে সামনে থেকে পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার প্রয়াস করে। কিন্তু বাইকটিকে বিপদ ভেবে সামনে থাকা হাতিটি কার্যত তেড়ে যায়। ভয়ে বাইকচালক আরও দ্রুতগতিতে পালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ছয়টি হাতি দুজন ব্যক্তির পিছু নেওয়ার চেষ্টা করে। এভাবে হাতির পালকে পিছনে আসতে দেখে কোনরকমে দুজন উঠে পালাতে থাকে। বাইক নিয়ে পরে যাওয়ায় দুজনের হাতে, পায়ে চোট লাগে। কিন্তু প্রাণ যে বাঁচাতে হবে। তাই ব্যাথা নিয়েই দৌড়তে থাকেন তাঁরা। কিন্তু এভাবে বাইক নিয়ে হাতির পালের সামনে দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা যে বোকামো ছাড়া কিছু না তা তাঁরা মানছেন।
বন দপ্তরের এক কর্তার কথায়, ‘মাঝেমধ্যে এখানে হাতির পাল বের হয়, সেজন্য সকলকে সাবধানে এই রাস্তায় যানবাহন চালানো উচিত। নয়তো বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।‘