গঙ্গারামপুর: প্রায় দেড়শো বছরের রীতি মেনে জৈষ্ঠ্যের প্রথম সোমবার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বিন্দ্যেশ্বরী কালী মুখার পুজোয় মাতলেন হাজার হাজার ভক্তরা। গঙ্গারামপুর চৌপথি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে হামজাপুর রুটে অবস্থিত বিন্দ্যেশ্বরী গ্রাম। একসময় বিন্দ্যেশ্বরী গ্রামে জনবসতি ছিল খুবই কম। বেশিরভাগ এলাকা বন জঙ্গলে ঘেরা ছিল। পুর্নভবা নদীতে সারাবছর জল থাকত। নদীতে স্রোত বইত।
প্রায় দেড়শো বছর আগে একদিন বৈশাখ মাসের শেষে গ্রামের বাসিন্দারা পুর্নভবা নদীতে স্নান করতে যায়। সেইসময় বাংলাদেশের দিক থেকে নদীতে একটি কাঠের মুখোশ ভাসতে দেখেন। ওপার বাংলা থেকে ভেসে আসা কাঠের কালী মায়ের মুখেশটি নদী দিয়ে ভেসে যেতে দেখে বিন্দ্যেশ্বরী এলাকার বাসিন্দা উপেন মণ্ডল, বজ্র মণ্ডলরা নদী থেকে মুখেশ তুলে গ্রামে নিয়ে আসেন। সেদিন রাতেই বজ্র মণ্ডল কালী মায়ের মুখোশটিকে পুজো করার স্বপ্নাদেশ পায়। পর দিন সকালে বজ্রবাবু বিষয়টি গ্রামবাসীদের কাছে জানান। তাঁর কথা শুনে গ্রামবাসীরাও উৎসাহিত হয়ে গ্রামের মঙ্গল কামনায় নদী থেকে তুলে আনা কাঠের কালী মায়ের মুখেশ পুজো শুরু করেন। তারপর থেকে জনশ্রুতি পায় বিন্দ্যেশ্বরী কালী মায়ের নাম। প্রায় দেড়শো বছর আগে যেদিন বিন্দ্যেশ্বরী মায়ের প্রথম পুজো হয়েছিল। সেদিন ছিল জৈষ্ঠ্যের প্রথম সোমবার। সেই থেকে রীতি অনুয়ায়ী প্রতিবছর জৈষ্ঠ্য মাসের প্রথম সোমবার বার্ষিক পুজো হয়ে আসছে। এদিন ছিল জৈষ্ঠ্য মাসের প্রথম সোমবার। রীতি মেনে রবিবার রাতে মায়ের পুজো হয়েছে। সকাল হতে প্রাচীন বিন্দ্যেশ্বরী কালী মায়ের প্রায় ৩ ফুট উচ্চ এবং আড়াই ফুট চওড়া কাঠের মুখোশটিকে পুজো দিতে বিন্দ্যেশ্বরী, হামজাপুর, চাম্পাতলি সর্বমঙ্গলা, কাটাবাড়ি, গঙ্গারামপুর সহ বহু জায়গার হাজার হাজার ভক্ত মায়ের কাছে পুজো দিতে ভিড় জমান। মায়ের কাছে পুজো দেবার পাশাপাশি বহু ভক্ত পায়রা, কলার ছড়ি, কাঠাল দেন মানত হিসেবে। পুজোয় পাঠাবলি দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রাচীন পুজো ঘিরে এদিন সকাল থেকে জমজমাট হয়ে উঠেছে বিন্দ্যেশ্বরী এলাকা। পাশাপাশি এই পুজোর আকর্ষণ বাড়িয়েছে মেলা।
বিন্দ্যেশ্বরী কালী পুজো কমিটির সম্পাদক সুবোধ রায় বলেন, ‘আমাদের পুজো বহুদিনের। প্রতিবছর জৈষ্ঠ্য মাসের প্রথম সোমবার বার্ষিক পুজো হয়।‘