বিধান ঘোষ, হিলি: এবছর বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের উদ্যোগে তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তাদের সাংসদ শারদ সম্মান দেওয়া হয়। সোমবার সেই সাংসদ শারদ সম্মান প্রত্যাখ্যান করল হিলি (Hili) ব্লকের ৫ নম্বর জামালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মানিকো অঞ্চল মোড় বারোয়ারি দুর্গাপুজো কমিটি।
ওইদিন রাতে সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই পুজো উদ্যোক্তারা দাবি করেন, প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ না করেও তাঁদের পুজোকে সাংসদ শারদ সম্মানের তৃতীয় স্থানে ভূষিত করা হয়েছিল। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁদের শারদ সম্মান দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। সেজন্য ওই সম্মান তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
পুজো কমিটির সম্পাদক সুজন মণ্ডল বলেন, ‘আমরা সাংসদ শারদ সম্মানে অংশগ্রহণ করিনি। স্থানীয় বিজেপি জনপ্রতিনিধি জানান, আমাদের পুজো ওই শারদ সম্মানে তৃতীয় হয়েছে। আমাদের পাশে ৭০ থেকে ৭৫ বছর ধরে একটি পুজো হচ্ছে। সেখানে বিজেপির লোকজন রয়েছেন। অথচ তাঁদের না দিয়ে মাত্র ২৩ বছরে পদার্পণ করা আমাদের পুজোকে ওই সম্মান দিচ্ছে। এতে অবাক হয়েছি। তাই আমরা সুকান্ত মজুমদারের শারদ সম্মান প্রত্যাখ্যান করছি। পুজোর জন্য রাজ্য সরকারের ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা পেয়েছি। তা পেয়ে আমরা উচ্ছ্বসিত।’
এদিকে সাংসদ শারদ সম্মান ফিরিয়ে দিতেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, সাংসদের ওই শারদ সম্মান প্রত্যাখ্যানের পিছনে তৃণমূলের প্রভাব রয়েছে। পালটা বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে ঘাসফুল শিবির।
এবছর সুকান্ত মজুমদার সাংসদ শারদ সম্মানের ঘোষণা করেন। সেখানে ১টি করে ট্রফি সহ প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে যথাক্রমে ৩০ হাজার, ২০ হাজার এবং ১০ হাজার টাকা ঘোষণা করা হয়। প্রতিটি ব্লকে পুজো উদ্যোক্তাদের নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে এতে অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। তারপরেই সাংসদ নিযুক্ত বিচারকমণ্ডলীরা পুজোমণ্ডপ পরিদর্শন করেন। এরপর ষষ্ঠীর দিন সাংসদ শারদ সম্মানের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারী পুজো কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়।
সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বললেন, ‘আমরা যেচে কাউকে শারদ সম্মান দিইনি। যদি সম্মান না-ই নেবে, তাহলে ওরা ফর্ম ফিলআপ কেন করেছিল। তৃণমূলের চাপে তারা সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছে।’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়ালের বক্তব্য, ‘তৃণমূলের ওপর যে দোষ চাপানো হয়েছে তা ভিত্তিহীন। সাংসদের সম্মান কারা গ্রহণ করবে, আর কারা প্রত্যাখ্যান করবে সেটা সম্পূর্ণ ক্লাবগুলির ব্যাপার। রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলিকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দিয়েছে। এর পাশাপাশি ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র জেলার ২৫০টি ক্লাবকে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন। এরপরও যদি কেউ সাংসদের শারদ সম্মান না নিতে চায়, সেটা তাদের ব্যপার। আমরা কিছু বলিনি।’

