ভাস্কর বাগচী, শিলিগুড়ি: আরজি কর কাণ্ড কিংবা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ, কোনও ইস্যুর প্রভাব পড়েনি রাজ্যের উপনির্বাচনে। উত্তরবঙ্গের দুটি আসনেই শাসকদলের কাছে বড় ব্যবধানে পরাজয় হয়েছে বিজেপির (BJP)। উত্তরের পদ্ম নেতাদের একাংশ মনে করছেন, এই ফলের পরেও যদি সাংগঠনিক দুর্বলতা খুঁজে বের করে খামতি না মেটানো হয়, তবে আগামী বিধানসভা ভোটে ফল ভালো হবে না। বিশেষ করে শেষ বিধানসভা ভোটে যে কয়েকটি আসনে বিজেপি জিতেছিল, ক্ষত মেরামত না হলে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গার (Manoj Tigga) বক্তব্য, ‘পরাজয় যখন হয়েছে, ঘাটতি তো নিশ্চয়ই ছিল। কিছু দুর্বলতা না থাকলে তো এভাবে হারতাম না। কোথাও নিশ্চয় কিছু ঘাটতি থেকেছে, সেটা আমাদের অনুসন্ধান করতে হবে।’ শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপির সম্পাদক শংকর ঘোষের কথায়, ‘কোথাও যদি দুর্বলতা থাকে, সেটা কাটিয়ে উঠতে হবে। শাসক তো চাইবেই, অপকর্ম করে নির্বাচনে জিততে। বিরোধী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সেই অপকর্ম রোখা। সেই দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আমাদের কোথাও খামতি রয়েছে কি না, সেটা আমাদের পর্যালোচনা করা দরকার।’
যদিও তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের ফলাফলে জনমত প্রকাশ পায় না, এটা প্রমাণিত সত্য। একই মত বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের। তাঁর দাবি, ‘মানুষ সেভাবে ভোট দিতে না পারায় এমন ফল হয়েছে।’ এই উপনির্বাচনে সিতাই জয়ের স্বপ্ন সেভাবে দেখেনি বিজেপি। তবে মাদারিহাট হাতছাড়া হওয়ায় দলীয় কোন্দলের পাশাপাশি সাংগঠনিক দুর্বলতাকে দায়ী করছেন অনেকে।
শাসকদলের (TMC) বিরুদ্ধে প্রচারের এত ইস্যু থাকলেও সেগুলিকে হাতিয়ার করে বিজেপি যে মানুষের মনে দাগ কাটতে পারেনি, তা ফলাফলে স্পষ্ট। পরবর্তী বিধানসভা ভোটের বছর দেড়েক আগে এই উপনির্বাচন যেমন তৃণমূলের কাছে ছিল অ্যাসিড টেস্ট, তেমন বিজেপির জন্য ছিল সাংগঠনিক শক্তি যাচাইয়ের সুযোগ। তাতে ডাহা ফেল করেছে পদ্ম শিবির। বিজেপি নেতাদের একটা বড় অংশ চাইছে, ’২৬-এর মহারণের আগে ঘাটতি মেটানোর উদ্যোগ নিক রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অনিন্দিতা রায় দাস জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে দলের সদস্যতা অভিযান চলছে। যেখানে মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা হচ্ছে। পুরোনোকে মনে না রেখে, ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে ’২৬-এর বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে এগোতে হবে।