শিলিগুড়ি : অসমের একটি পুরোনো প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার হলেন ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিজেপি নেতা অলক সেন। যদিও গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সোমবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের নির্দেশে জামিন পেয়ে যান তিনি। ঘটনায় সাড়া পড়ে গিয়েছে পদ্ম শিবিরের অন্দরে। যদিও দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি শ্যামলচন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আমার এসবকিছু জানার কথা নয়। তিনি দলের কোনও পদেও নেই।’ ফোনে সাড়া দেননি সাংসদ জয়ন্ত রায়। মেসেজ করা হলেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি। এনজেপি থানার এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘অসমের একটি মামলায় আদালতের সমন থাকায় রবিবার অম্বিকানগর থেকে অলককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ সোমবার আদালতে নিয়ে য়াওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমের সামনে অলক নিজেকে বিজেপি কর্মী দাবি করার পাশাপাশি গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে বলেন, ‘এক ব্যবসায়ীকে দেওয়া চেক বাউন্সের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
একটা সময় ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় অলক ছিলেন প্রথম সারির বিজেপি নেতা। তাঁর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল বিজেপির কিছু রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতার। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের আসনে প্রার্থীও হয়েছিলেন। ২০১৩-১৪ সালে অলকের বিরুদ্ধে অসমে চাকরি দেওয়ার নামে বহু কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। সেসময় থেকেই ফুলবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বকরাভিটাতে থাকতে শুরু করেন অলক। ’১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রে টিকিটের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু ভোটের কয়েক মাস আগে অসম সিআইডি তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ফলে টিকিট পাননি তিনি। ’২১-এও চেষ্টা করেন। কিন্তু শিখা চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় এবারও পিছিয়ে পড়তে হয় অলককে। জনমত তৈরি, বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো রাস্তা, কালভার্ট তৈরি, কুয়ো-চাপাকলের কাজ করিয়ে ধীরে ধীরে জনসমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছেন তিনি। সবমিলিয়ে উন্নয়নের কাজে কোটি টাকার ওপর তিনি খরচ করেছেন বলে ধারণা অনেকের। ’২৬-র ভোটের জন্যও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। টিকিট পেতে যোগাযোগও শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ফের তাঁকে গ্রেপ্তার হতে হল। এদিন এনজেপি থানায় দাঁড়িয়ে এক অনুগামী বললেন, ‘এর আগেও চেষ্টা করে বিধানসভার টিকিট পাননি দাদা। এবারও চেষ্টা শুরু করেছিলেন। কিন্তু টিকিটের আশা রইল না।’ বকরাভিটার অসীম আচার্য অবশ্য মনে করছেন, ‘যে মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা কয়েকমাস আগে মিটমাট করা হয়ে গিয়েছে। কেউ পেছন থেকে কাঠি নেড়েছেন কি না জানি না।’