অনির্বাণ চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ: ফের বেসুরো নগেন রায়। উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য- উভয়কেই দুষলেন বিজেপির রাজ্যসভার এই সাংসদ। শুক্রবার কালিয়াগঞ্জের বরুণা অঞ্চলের গোয়ালগাঁওতে এক সম্মেলনি আলোচনা সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন গ্রেটার কোচবিহার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা নগেন রায়। সেখানেই উত্তরবঙ্গে এইমস স্থাপন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিজেপির সাংসদ নগেন রায় বলেন, ‘কেন্দ্র বা রাজ্য, কেউই উত্তরবঙ্গের জন্য কিছুই করেনি৷ এ ব্যাপারে আমি পার্লামেন্টে বলেছি। ভারতের উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গেও কথা হয়েছে।’ তিনি উত্তরবঙ্গে এইমস ধাঁচের হাসপাতাল না হওয়ারও দায় চাপিয়েছেন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের ঘাড়ে।
ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বদল হলেও এই দলের পক্ষে বঙ্গের সিংহাসন দখল করার কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না নগেন। ছাব্বিশের নির্বাচনে রাজ্যে পরিবর্তন হবে? নগেনের জবাব, ‘আমার তো মনে হয় না কোনও পরিবর্তন হবে।’ তাহলে আগামী নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির ফল কেমন হবে? প্রশ্ন শুনেই মুচকি হেসে বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘কী আর বলব? রেজাল্ট দেখবেন।’
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের এখনও প্রায় নয় মাস বাকি৷ তার আগে বিজেপির রাজ্য সভার সাংসদের এহেন বক্তব্য তৃণমূলকে অক্সিজেন জোগাবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গ্রেটার নেতার মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত জোড়া ফুল শিবির৷ তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘তিনি তো বাস্তব কথাই বলেছেন৷ আসলে তিনি বুঝতে পেরেছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ফের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়ে রাজ্যের মসনদে বসতে চলেছে৷’
এদিন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিজেপির নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যকে তীব্র কটাক্ষ করেন রাজ্যসভার সাংসদ। নগেন রায় বলেন, ‘শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, উনি একজন হাফ ম্যাড মানুষ। মিডিয়ায় শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার জন্য যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁরা পাগল। কিন্তু এই মূর্খ জানে না যে রাজ্য ভাগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকেই অর্ডার দিয়েছে৷ সেই বুর্বক লোকটাকে রাজ্যের সভাপতি বানিয়েছে।’
নয়া রাজ্য সভাপতিকে নগেনের কটাক্ষ নিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপি সভাপতি নিমাই কবিরাজের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। নিমাই বলেন, ‘তিনি রাজ্যসভার সদস্য। উপরের ব্যাপার। আমার বলার কিছু নেই৷ এসবের জন্য দিল্লি নেতৃত্ব আছে।’
তবে সুযোগ পেয়ে দুই শিবিরের দিকেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত। তাঁর কথায়, ‘এই রাজ্যে যাহাই বিজেপি, তাহাই তৃণমূল। বিজেপি হাওয়ায় চলে। এদের কোনও সংগঠন নেই। কিন্তু, দলীয় কোন্দলে ভরা৷ তারই উদাহরণ অনন্ত মহারাজ।’