নয়াদিল্লি: ব্যাট-বলের আকর্ষণীয় দ্বৈরথের মাঝে গড়াপেটার আশঙ্কা চলতি আইপিএলে। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের তরফে এই মর্মে সম্ভাব্য গড়াপেটা নিয়ে দশ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে সতর্ক করা হয়েছে। খবর, হায়দরাবাদের এক ব্যবসায়ী ক্রিকেটারদের নানা প্রলোভনে ফেলার চেষ্টা করছেন। খেলোয়াড়দের পাশাপাশি দলের কর্তাদের কাছাকাছি আসতে দামি উপহার দেওয়া, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণের মতো পদক্ষেপ করছেন। কেউ যেন সেই প্রলোভনে পা না দেয়।
আইপিএলে অংশগ্রহণকারী দশ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে এ ব্যাপারে বিশেষ নির্দেশিকা পাঠিয়েছে বিসিসিআই। এহেন কোনও অবাঞ্ছিত ব্যক্তি যদি প্রলোভিত করার চেষ্টা করেন, বিযয়টি যেন তৎক্ষণাৎ বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার গোচরে আনা হয়। দুর্নীতি দমন শাখাও বিষয়টির ওপর কড়া নজর রাখছে। দাবি, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নাকি বিভিন্ন ম্যাচে মাঠে দেখা গিয়েছে।
সরাসরি না হলেও ঘুরপথে ক্রিকেটার, ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করছেন। অতীতে গড়াপেটার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন ওই ব্যক্তি। দামি সোনার উপহার পাঠাতেন। বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখার চোখ ফাঁকি দিতে এবার যা ঘুরিয়ে করার চেষ্টা করছেন। খবর, সরাসরি ক্রিকেটারদের বদলে তাঁদের আত্মীয়দের সঙ্গে সখ্য বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। নিজেকে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের অনুরাগী দাবি করে উপঢৌকন পাঠাচ্ছেন। বাদ যাচ্ছে না কোচ, সাপোর্ট স্টাফদের আত্মীয়রাও!
হায়দরাবাদের তথাকথিত ব্যবসায়ীর সঙ্গে যুক্ত আছেন একাধিক ক্রিকেট বুকি। গড়াপেটা করতে পুরো নেটওয়ার্ক সক্রিয় রয়েছে। উনিশ-বিশে ২০১৩-র মতো ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ২০১৩ সালে গড়াপেটা কেলেঙ্কারি নিয়ে আইপিএলে ঝড় বয়ে যায়। চেন্নাই সুপার কিংস, রাজস্থান রয়্যালসকে ২ বছরের জন্য লিগ থেকে ছাঁটাই করা হয়। নির্বাসিত হন শান্তাকুমারন শ্রীসান্ত সহ একঝাঁক খেলোয়াড়।
পরবর্তী সময়ে গড়াপেটা আটকাতে দুর্নীতি দমন শাখাকে শক্তিশালী করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। গড়াপেটা, দুর্নীতি বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নেয় বোর্ড। দুর্নীতি দমন শাখার দাবি, চলতি আইপিএলে গড়াপেটা করতে তৎপর হায়দরাবাদের সংশ্লিষ্ট ওই ব্যবসায়ী। ইতিমধ্যে একাধিক ম্যাচে মাঠে দেখা গিয়েছে। তবে তদন্ত এবং নজরদারির জন্য ব্যবসায়ীর নাম গোপন রাখা হয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিকে সতর্ক করে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যেখানে খেলোয়াড়, ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে জড়িতদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, কী করা উচিত আর কী নয়। সতর্ক করা হয়েছে আইপিএলের ধারাভাষ্যকার টিমকেও।
বোর্ডের এক শীর্ষকর্তা দাবি করেছেন, ‘আগুন না থাকলে ধোঁয়া বেরোবে না। সন্দেহজনক বেশ কিছু জিনিস ইতিমধ্যেই চিন্তায় ফেলছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তাই প্রথম থেকে বাড়তি তৎপরতা থাকছে।’