ফালাকাটা: স্কুল, পরপর টিউশন। এসব নিয়েই এখন ব্যস্ত পড়ুয়ারা। পাঠ্যবই ছাড়া বাইরের গল্প, কবিতা, উপন্যাস পড়ার সময় নেই আর কারও। বই পড়ার আগ্রহ দিনের পর দিন কমছেই। এতে ধুঁকছে প্রকাশনী সংস্থাগুলি। তাই ছোটদের বইয়ের প্রতি উৎসাহ জোগাতে এক অভিনব বইমেলার (Book fair) আয়োজন করা হল।
ফালাকাটা (Falakata) গার্লস হাইস্কুলের ক্লাসরুমেই বিরতির সময় এই বইমেলা বসছে। কলকাতার একটি প্রকাশনি সংস্থা মেলার যাবতীয় আয়োজন করেছে। একেবারে ক্লাসরুমে হাজার হাজার এই বইয়ের সম্ভার দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত পড়ুয়ারা। বসে বই পড়ার পাশাপাশি কেনার ব্যবস্থাও থাকছে এই মেলায়।
ফালাকাটা গার্লস হাইস্কুলের টিচার ইনচার্জ নন্দা ভাদুড়ির কথায়, ‘পাঠ্যবই ছাড়াও বাংলা-ইংরেজি সাহিত্য, কবিতা, গল্প, উপন্যাসের প্রতি পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়াতেই আমরা তিনদিনের এই বইমেলার আয়োজন করেছি। কলকাতার একটি প্রকাশনী সংস্থাই এই সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে। একটি ক্লাসরুমে এই বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে।’
ফালাকাটা গার্লস হাইস্কুলের একটি শ্রেণিকক্ষে এমন অভিনব বইমেলার আয়োজন করা হয়েছে। কলকাতা থেকে তো বটেই, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রকাশ করা নজরকাড়া বইয়ের সম্ভার নিয়ে এসেছেন। পুরোনো দিনের ছোটদের সাহিত্যের পাশাপাশি একালের স্মরণীয় গল্প-উপন্যাসও পাওয়া যাচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার এই মেলা শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। যখন যে ক্লাসে ব্রেক থাকছে, তখন সেই ক্লাসের পড়ুয়াদের মেলায় আসতে দেওয়া হচ্ছে। এর জন্য অবশ্য আলাদা স্টল বসানো হয়নি। শ্রেণিকক্ষের চেয়ার, ডেস্কের সাহায্যেই বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে। স্কুলে এসে টিফিন ব্রেক এবং ছুটির সময় পড়ুয়ারা বই দেখছে। বুধবার পর্যন্ত এই মেলা চলবে।
এক ছাত্রী পায়েল সরকারের কথায়, ‘স্কুলের মধ্যে এমন বইমেলা আগে দেখিনি। অনেক বই এক সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি। দুটি গল্পের বইও কিনেছি।’ একাদশ শ্রেণির ছাত্রী স্নিগ্ধা বর্মনের কথায়, ‘এবছর ফালাকাটায় জেলা বইমেলা দেখেছি। এবার স্কুলেও বইমেলা বসল। বেশ কিছু বই পড়েছি। এমনকি একটি ইংরেজি সাহিত্যের বই কিনেছি।’
প্রকাশনী সংস্থাটির তরফে সুভাষ বাড়ুই বলেন, ‘দিন-দিন পড়ুয়াদের মধ্যে পাঠ্যবই ছাড়া অন্য বই পড়ার আগ্রহ কমছে। এতে প্রকাশনী সংস্থাগুলিও ধুঁকছে। তাই পড়ুয়াদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ বাড়াতেই স্কুলে এই আয়োজন। পড়ুয়াদের মধ্যে একটুকুও যদি বইয়ের প্রতি আগ্রহ আসে, সেটাই আমাদের সাফল্য।’
ফালাকাটা গার্লস হাইস্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত চলবে এই মেলা। মেলায় স্কুলের পরও বাইরের যে কেউ এসে বই কিনতে পারবেন। তবে পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ ছাড় রয়েছে।