Thursday, February 13, 2025
Homeউত্তরবঙ্গআলিপুরদুয়ারBuffalo Smuggling | মোষ পাচারে আঙুল ফুলে কলা গাছ

Buffalo Smuggling | মোষ পাচারে আঙুল ফুলে কলা গাছ

আলিপুরদুয়ার ব্যুরো: মোষ পাচার কাণ্ডের অন্যতম পান্ডা কার্তিক দাসকে শনিবার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে (Buffalo Smuggling)। তার পরিবারের দাবি, কার্তিক নিরপরাধ। এদিকে এলাকায় কিন্তু মোষ পাচারে কার্তিকের জড়িত থাকার বিষয়টি কারোরই অজানা নয়। প্রকাশ্যে অবশ্য এনিয়ে গ্রামের কেউই মুখ খুলতে চাননি। কারণ, একবার বেরিয়ে এলে কার্তিক মুখ খোলার ‘প্রতিশোধ’ নিতে পারে, এই ভয়টা সবারই আছে।

গ্রামের একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, একটা সময় কার্তিক সবজি এবং গালামাল সামগ্রী বিক্রি করত। এখন তার ১০ থেকে ১৪ চাকার একাধিক ট্রাক ভাড়া খাটে। বারবিশা লস্করপাড়া গ্রামের পুরোনো বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে প্রাসাদোপম দোতলা বাড়ি তৈরির কাজ চলছে। জমিজমাও রয়েছে প্রচুর। যদিও কার্তিকের বাবার দাবি, ১১ বিঘা জমি তিনিই করেছেন। ব্যাংকঋণ নিয়ে ছেলেকে ২টি ট্রাকও করে দিয়েছেন তিনিই। শুধু তাই নয়, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েই চলছে ছাদ পেটানো দোতলা বাড়ি বানানোর কাজ।

সোমবার বিকেলে বারবিশা লস্করপাড়া গ্রামের গৌড়ীয় মঠ এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, দ্বিতল বাড়ির নির্মাণস্থল থেকে অনতিদূরে একটি দোকানের সামনে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ২-৩ জন মহিলা। হাসিমুখে নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। এগিয়ে গিয়ে কার্তিকের কথা জিজ্ঞাসা করতেই সবার মুখের হাসি উবে যায়। পালটা প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কে? আপনি কি পুলিশ?’ সাংবাদিক পরিচয় দিতে কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে তাঁরা বললেন, কার্তিক আমাদের গ্রামেরই ছেলে। বারবিশা সেলস ট্যাক্স গেটে দোকান ছিল। সেখানে সবজি এবং মুদিখানার সামগ্রী বিক্রি করত। শুনছি মোষ পাচারে জড়িত অভিযোগে ওকে নাকি পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে। একথা বলার পরই ওই মহিলা হঠাৎ চুপ করে যান। সভয়ে গলা নামিয়ে বলেন, ওর বাবা আসছে। আমরা আর কিছু বলতে পারব না। অযথা অশান্তি চাই না।

কার্তিকের বাবা হেঁটে বাড়ির পথে ঢুকে যেতেই ফের কথাবার্তা শুরু। এক মহিলা চকিত দৃষ্টিতে চারপাশটা একবার চোখ বুলিয়ে দেখে নিলেন। তারপর বললেন, ‘আগে তো সাধারণ জীবনযাপন করত। অবৈধ কারবারে জড়িয়ে গত কয়েক বছরে ওর চালচলন একেবারে বদলে গিয়েছে। হাতে সবসময় লাখখানেক টাকার মোবাইল ফোন থাকে। মাটিতে পা পড়ে না। স্কুটি এবং ছোট চার চাকা গাড়ি ছাড়া চলাচল করে না।’

এক ব্যক্তিও যোগ দিলেন সেই আলোচনায়। কার্তিক সম্পর্কে তাঁর সংযোজন, ‘বিভিন্ন ধাবা এবং হোটেলে সিন্ডিকেটের লোকজন এবং বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে অঢেল টাকাপয়সা খরচ করে। এসব গ্রামের সবাই জানে। কিন্তু ভয়ে কেউই কিছু বলেন না। প্রতিবাদ করেও লাভ নেই। কারণ ওর মাথার ওপর বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতা এবং পুলিশের একাংশের হাত রয়েছে।’

গ্রামবাসীদের একাংশের কথায়, কার্তিকের ৬-৭টা কনটেনার রয়েছে। সেগুলোতেই মোষ, উট সহ বিভিন্ন গৃহপালিত পশু ভিনরাজ্যে পাচার করত। গোটা কারবারই চলত সেটিংয়ের মাধ্যমে। যদিও এসব অভিযোগ মানতে নারাজ কার্তিকের বাবা অরুণ দাস। তিনি সাফ জানান, ছেলেকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। সময়ে গাড়ির কিস্তি দেওয়া নিয়ে ব্যাংকের এক কর্মীর সঙ্গে কার্তিকের কথা কাটাকাটি হয়েছিল। সে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। সে-ই ষড়যন্ত্র করে ছেলেকে কৌশলে ফাঁসিয়েছে। অরুণের দাবি, ‘জমিজমা ঘরবাড়ি এসব ছেলের টাকায় নয়, ধারদেনা করে আমিই করেছি। যারা ছেলের নামে অপবাদ দিচ্ছে, তারা সবটা না জেনেই বলছে।’

Shahini Bhadra
Shahini Bhadrahttps://uttarbangasambad.com/
Shahini Bhadra is working as Trainee Sub Editor. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Online. Shahini is involved in Copy Editing, Uploading in website.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img
[td_block_21 custom_title="LATEST POSTS"]

Most Popular