নয়াদিল্লি: অধিনায়কত্ব নিয়েও কার্যত বোমা ফাটালেন সুনীল গাভাসকার। পারিবারিক কারণে রোহিত শর্মাকে প্রথম দুই টেস্টে পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা। পরিবর্তে সহ অধিনায়ক জসপ্রীত বুমরাহ সম্ভবত সামলাবেন নেতৃত্বের গুরুভার। তবে গাভাসকার চান, শুধু দুই টেস্টেই নয়, পুরো সিরিজেই বুমরাহকে অধিনায়ক ঘোষণা করা হোক। সিরিজের শেষ তিন টেস্টে দলে থাকলেও, রোহিত খেলুক সাধারণ সদস্য হিসেবে।
কিংবদন্তির যুক্তি, সফরের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার মতো কঠিন সিরিজে নিয়মিত অধিনায়ককে না পাওয়া দলের জন্য ধাক্কা। আর শুরুতে বুমরাহ, তারপর রোহিত – নেতৃত্ব নিয়ে যে রদবদলে জটিলতাও তৈরি হবে। নিউজিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ইতিমধ্যেই ঘেঁটে রয়েছে ভারতীয় দল। তাই নির্বাচক কমিটির উচিত এখনই গোটা সিরিজের জন্য বুমরাহকে অধিনায়ক নির্বাচন করে দেওয়া।
গাভাসকার বলেছেন, ‘সিরিজের প্রথম ম্যাচে অধিনায়কের উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ। নাহলে সহ অধিনায়কের ওপর চাপ পড়ে যায়। শুনছি রোহিত প্রথম ম্যাচ খেলবে না। দ্বিতীয় ম্যাচেও পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা। খবর ঠিক হলে, অজিত আগরকারের (নির্বাচক কমিটির প্রধান) উচিত রোহিতকে পরিষ্কার বলে দেওয়া, তুমি যতদিন চাও বিশ্রাম নিতে পারো। যখন মনে হবে দলে যোগ দাও। তবে বাকি সিরিজে তোমাকে সাধারণ সদস্য হিসেবে খেলতে হবে। সহ অধিনায়কই পুরো সিরিজে নেতৃত্ব দেবে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ০-৩ হেরেছি আমরা। অজি সফরে ঘুরে দাঁড়াতে নেতৃত্ব সহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই পরিষ্কার চিন্তাভাবনা প্রয়োজন। ব্যক্তি নয়, ভারতীয় ক্রিকেট সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। ভারত যদি নিউজিল্যান্ডকে ৩-০ হারাত, তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম ছিল।’
পাশাপাশি সঠিক প্রস্তুতির কথা বলতে গিয়ে শচীন তেন্ডুলকারের উদাহরণ টেনে আনেন। রোহিত, বিরাট কোহলিদের যা মনে করিয়ে দিয়ে গাভাসকার বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে রনজি ট্রফিতে খেলছিল শচীন। ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামের যে ম্যাচে দ্বিশতরানও করে। দলের সাফল্যে অবদান রাখতে কী কী করণীয়, তা জানত এবং সেটাই করত। আর এইজন্যই শচীন শচীনই।’
শেন ওয়ার্নের বিরুদ্ধে কীভাবে পিচে রাফ তৈরি করে প্র্যাকটিস করেছিল শচীন, তাও তুলে ধরেন গাভাসকার। বলেছেন, ‘ব্রাবোর্নে রনজি ম্যাচের পর চেন্নাইয়ে পৌঁছে পিচে ক্ষত তৈরি করে লক্ষ্মণ শিবরামকৃষ্ণানের (প্রাক্তন লেগস্পিনার) বিরুদ্ধে টানা প্র্যাকটিস করেছিল ওয়ার্নকে সামলানোর কথা মাথায় রেখে। রাফ পিচেই স্লগ সুইপ, ইনসাইউ আউট শটের টানা অনুশীলন। এই একাগ্রতাই শচীনকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছিল। প্রত্যেক ক্রিকেটারের উচিত, শচীনের পথ অনুসরণ করা।’ পরিশ্রমের পুরস্কার, সিরিজের সর্বাধিক ৪৪৬ রান করেছিলেন শচীন। ব্যাটিং গড় ১১১.৫০।
এদিকে, অনিল কুম্বলে অবাক পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরুর প্রাক্কালে ভারতের প্রস্তুতি ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্তে। প্রাক্তন হেডকোচ বলেছেন, ‘আমি রীতিমতো অবাক প্রথম টেস্টের আগে ভারতের প্রস্তুতি ম্যাচ বাতিল করায়। সিরিজ শুরুর আগে প্র্যাকটিস ম্যাচ প্রস্তুতির জন্য আদর্শ হত। নেটে যতই প্র্যাকটিস করুক না কেন, ম্যাচ-প্রস্তুতি সম্পূর্ণ আলাদা ব্যাপার। বাইশ গজে দাঁড়িয়ে অনুশীলন ম্যাচে বোলারদের সামলানোর বিকল্প নেই।’
টেস্ট দলের অন্যতম দুই সদস্য লোকেশ রাহুল, উইকেটকিপার-ব্যাটার ধ্রুব জুরেলকে অবশ্য আগেভাগে পাঠানো হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সফররত ‘এ’ দলের হয়ে দ্বিতীয় চারদিনের ম্যাচে অংশ নেওয়ার কথা দুজনেরই। যদিও কুম্বলের দাবি, পুরো টেস্ট দলের জন্য প্রস্তুতি ম্যাচের প্রয়োজন সেখানকার পরিবেশ, পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে।

