নয়াদিল্লি: স্বপ্নের বোলিং। একার হাতে প্রায় দলকে সিরিজে লড়াইয়ে রাখা। সিরিজ সেরার পুরস্কার, ঝোলায় ৩২ উইকেট। যদিও ট্রফি হাতছাড়ার সঙ্গে ফিরতে হয়েছে পিঠের চোট নিয়ে। পরবর্তী ইংল্যান্ড সিরিজ তো অবশ্যই, কবে ফিরবেন, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা। মাস ঘুরলে ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। চিন্তা সেখানেও বুমরাহকে পাওয়া নিয়ে।
বুমরাহর যে চোটের জন্য সরাসরি টিম ম্যানেজমেন্টকেই দুষলেন হরভজন সিং। গোটা সিরিজে ১৫০-এর বেশি ওভার বল করতে হয়েছে। দিনে ৮-৯টা স্পেলও পর্যন্ত করতে হয়েছে। বাড়তি ধকলের ফল পিঠের চোট। হরভজন বলেন, ‘আখ থেকে যেমন রস নিঙরে বের করা হয়, সেভাবে বুমরাহকে এই সিরিজে ব্যবহার করা হয়েছে। ট্রাভিস হেড ক্রিজে তো বুমরাহকে আনো। মার্নাস লাবুশেন তো বুমরাহর হাতে বল। স্মিথের ক্ষেত্রেও তাই। ফল, নির্ণায়ক টেস্টের নির্ণায়ক দিনে বুমরাহ নেই বল হাতে।’
হরভজনের অভিযোগ, বুমরাহর ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টকে গুরুত্ব দেননি গৌতম গম্ভীররা। দিলে এই পরিণতি হত না। প্রাক্তন স্পিনারের দাবি, ‘অস্ট্রেলিয়া হয়তো পঞ্চম টেস্ট জিতত, কিন্তু বুমরাহ বল করলে টার্গেটে পৌঁছোতে ওদের গোটা আটেক উইকেট পড়ত। জিততে আরও ঘাম ঝরাতে হত। তোমরাই (গম্ভীররা) বুমরাহর পিঠের বারোটা বাজিয়েছ। বুমরাহকে কত ওভার বল করানো যেতে পারে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি।’
সিডনিতে জোড়া স্পিনারের স্ট্র্যাটেজি নিয়েও গম্ভীরদের বিঁধলেন। হরভজনের যুক্তি, ভুলভাল দল নির্বাচন। সবুজ পিচ। খালি চোখেও যা পরিষ্কার। দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাটানোর পর কীভাবে এরকম ভুল হয় গম্ভীরের, অবাক প্রাক্তন স্পিনার। এরপরই তোপ, ‘সাজঘরে বসে থাকা ভদ্রলোকেরা যদি সহজ জিনিসটা না বুঝতে পারে, তাহলে ওখানে কী করতে আছে? এটা টি২০ ক্রিকেট নয়, টেস্ট, বোঝা উচিত ছিল।’
এরপর রাহুল দ্রাবিড় জমানার প্রসঙ্গ টেনে হরভজনের ইঙ্গিতপূর্ণ প্রতিক্রিয়া, ‘সবকিছু ঠিকঠাক ছিল, যতদিন দ্রাবিড় দায়িত্ব সামলেছেন। বিশ্বকাপও জিতেছে। পারফরমেন্সে ধারাবাহিকতা। প্রশ্ন, হঠাৎ সেই দলটার কী হল? গত ছয় মাসে আমরা শ্রীলঙ্কায় গিয়ে হেরেছি। নিউজিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছি। এবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৩-১ হার।’
সুনীল গাভাসকার অপরদিকে তারকা-পুজোর ভারতীয় ক্রিকেট সংস্কৃতি বন্ধের দাবি তুললেন। প্রাক্তনের ধারণা, পরবর্তী ৮-১০ দিন ঘটনাবহুল হতে চলেছে। সেদিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তবে তারকা-পুজো বন্ধ হওয়া উচিত এখনই। ভারতীয় ক্রিকেটের প্রতিই ফোকাস, দায়বদ্ধতা থাকা উচিত।
কথায় কথায় বিরাট, রোহিতদের ছুটি নেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বলেন, ‘প্রকৃত অসুস্থতা ছাড়া প্রতি ম্যাচে খেলতে হবে। কেউ যদি দলের প্রতি দায়বদ্ধ না হয়, তাহলে তাকে দলে রাখাই উচিত নয়। এমন প্লেয়ার দরকার নেই, যে সিরিজের কয়েকটা খেলবে, বাকি সময় অন্যত্র কাটাবে। বোর্ডের উচিত বিষয়টি খেলোয়াড়দের পরিষ্কার করে দেওয়া। দুই নৌকোয় পা দিলে হবে না।’