দুর্গাপরঃ লোকসভা নির্বাচন মিটতে না মিটতেই এক সময়ের লালদুর্গ বলে পরিচিত ইস্পাত নগর দুর্গাপুরে সিপিএমে বড় ভাঙন। সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও ডাঃ প্রদীপ মজুমদার। পঙ্কজ রায়ের দল ছাড়া বাম শিবিরে বড়সড় ধাক্কা বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল। যদিও সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, দলবিরোধী কাজের জন্য পঙ্কজ রায় সরকারকে দল থেকে আগেই বহিষ্কার করা হয়েছে।
পঙ্কজ রায় সরকারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, লোকসভা নির্বাচনের সময় তাঁকে উপেক্ষা করা হয়েছে। তাই তিনি দলের নেতৃত্বের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন। পঙ্কজ বাবু ইসিএলের কর্মী ছিলেন। ১৫ বছরেরও বেশি চাকরি থাকা সত্বেও তিনি দলের কাজ করার জন্য সেখান থেকে ইস্তফা দেন। পরে তিনি সিপিএমের হোলটাইমার বা সর্বক্ষণের কর্মী হন। এই শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক নেতা হিসেবে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন।
বাংলায় ‘বামের ভোট রামে যাচ্ছে’- এমন কথা ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বারবার উঠে আসছিল রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের মুখে। সেই কথার সত্যতা রবিবার স্বীকার করে নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিএমের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার। তিনি বলেন, ‘বামেদের ভোট কেন বিজেপিতে যাচ্ছে? এই নিয়ে সীতারাম ইয়েচুরি, প্রকাশ কারাতদের সামনে প্রতিবাদ করা হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গোটা দেশ জুড়ে বামপন্থীরা সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলে। কিন্তু একশ্রেণীর নেতা গোপনে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগে থাকেন। এইসব মেনে নিয়ে কি দলে থাকা যায়? সেই জন্যই বাধ্য হয়েই দল ছাড়লাম। পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূলে যোগ দিলাম।’
এদিনের যোগদান প্রসঙ্গে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘পঙ্কজ রায় সরকারকে তৃণমূল কংগ্রেসের পরিবারের সদস্য করা হল। আরও অনেক নেতা দলে আসার জন্য যোগাযোগ করেছেন। তাদের আবেদন রাজ্য নেতৃত্ব বিচার বিবেচনা করছে।’ তিনি এদিন সিপিএমের বর্তমান অবস্থা নিয়েও কটাক্ষ করেন।