আলিপুরদুয়ার: বক্সা পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে থাকা আঠারোটি গ্রামে জলের তীব্র সংকট (Water crisis) তৈরি হয়েছে। টানা অনাবৃষ্টির জেরে পাহাড়ের অনেক ঝোরা শুকিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সেখানকার হাজার পাঁচেকেরও বেশি বাসিন্দা।
বক্সার (Buxa) বিভিন্ন গ্রামে পানীয় জলের মূল উৎসই হল ঝোরা। বর্তমানে একাধিক ঝোরা শুকিয়ে যাওয়ায় গ্রামে পাইপলাইনের সাহায্যে বাসিন্দারা জল সংগ্রহ করতে পারছেন না। দূরের ঝোরা থেকে তাঁরা জল টেনে নিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। পাহাড়ের পাদদেশে থাকা তিনটি গ্রামে জলের ট্যাংক পাঠাচ্ছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। সেই ট্যাংকের সাহায্যে দূরবর্তী এলাকা থেকে পানীয় জল নিয়ে গিয়ে বাসিন্দাদের প্রতিদিনের জলের প্রয়োজন মেটানো হচ্ছে কোনওমতে।
সব মিলিয়ে বক্সা পাহাড়ের প্রায় ৫০০০ বাসিন্দাকে এখন চরম জলকষ্ট পোহাতে হচ্ছে। রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পার্থপ্রতিম দত্ত বলেন, ‘বক্সা পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে থাকা গ্রামগুলির সব জায়গাতেই এ বছর জল নিয়ে কমবেশি ভুগতে হচ্ছে। পাহাড়ে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় জলের উৎসস্থল অনেক জায়গায় শুকিয়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে দূরের কোনও উৎসস্থল থেকে বাসিন্দারা জল সংগ্রহ করছেন।’
বক্সা ফোর্ট সংলগ্ন এলাকায় যে ঝোরা থেকে জল পাইপের মাধ্যমে আসত, সেই উৎসস্থল শুকিয়ে গিয়েছে। ফলে নীচের একটি ঝোরা থেকে কষ্ট করে জল সংগ্রহ করে বয়ে আনতে হচ্ছে টেন্ডু ডুপ্পার মতো এলাকার বাসিন্দাদের। পাহাড়ের ছোট ছোট অনেক ঝোরা এ বছর শুকিয়ে গিয়েছে। অন্যান্য বছর সবসময় ঝোরার জল পাইপের সাহায্যে পাওয়া যেত। স্থানীয়রা বলছেন, বক্সা পাহাড়ের ঝোরায় এখনও জল রয়েছে। সেখান থেকে জল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হলে গরমকালে পাহাড়ের কয়েকটি গ্রামের পানীয় জলের সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে।
এদিকে, পাহাড়ের পাদদেশে সান্তালাবাড়ি, ২৮ মাইল, ২৯ মাইল গ্রামে জলের উৎসস্থল প্রায় দু’সপ্তাহ হল শুকিয়ে রয়েছে। এখানে পাহাড়ি নদীর বুকে রয়ে গিয়েছে কেবল বালি আর পাথর। জল বলে কিছু নেই। ফলে তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা এখন প্রশাসনের পাঠানো জলের উপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। ২৯ মাইল গ্রামের বাসিন্দা ভিকি লামা বলেন, ‘আমাদের এখানে কাছাকাছি জলের উৎস বলে কিছু নেই। পাহাড়ের যে ঝোরা থেকে পাইপে জল বছরের পর বছর আসত, সেটি এ বছর পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ট্যাংকের সাহায্যে দিনে দু’বার গ্রামে জল সরবরাহ করায় জলকষ্ট খানিকটা লাঘব হয়েছে।’
বক্সা পাহাড়ের সদরবাজারের বাসিন্দা ইন্দ্রশংকর থাপা। গত কয়েক দশকের মধ্যে শেষ কবে বক্সা পাহাড়ের জলের সোর্স এভাবে কখনও শুকিয়ে যেতে দেখেছেন, মনে করতে পারছেন না। তাঁর কথায়, ‘পাহাড়ের কয়েকটি ঝোরায় সামান্য পরিমাণে জল পাওয়া গেলেও যে ঝোরাগুলিতে জল আসছে না, তার কারণ খতিয়ে দেখাটা এখন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী কয়েক বছর পর ঝরনার জল পাওয়া যাবে তো? সেটাই এখন আমাদের ভাবাচ্ছে।’
বক্সা পাহাড়ের সদরবাজার, বক্সা ফোর্ট, তাসিগাঁও, লালবাংলো, লেপচাখা, খাটালাইন, চুনাভাটি, আদমা সহ পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামেই সপ্তাহ দুয়েক হল কমবেশি জলসংকট দেখা দিয়েছে। ঝরনার জল পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্রামে নিয়ে এসে প্রয়োজন মেটানো হলেও অনেক জায়গায় সেই উৎসস্থল শুকিয়ে গিয়েছে। কোথাও সামান্য পরিমাণ জল মিলছে। এহেন পরিস্থিতিতে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে গৃহপালিতদের নিয়েও সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা।
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: আলু বা সব সবজি দিয়ে সিঙাড়া তো হামেশাই খেয়ে থাকেন। কিন্তু…
দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: এক বিজেপি কর্মীকে মারধর (BJP Worker Attacked) এবং তাঁর বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: নিট দুর্নীতি (NEET) নিয়ে বর্তমানে উত্তাল গোটা দেশ। এবার নিট প্রসঙ্গে…
সানি সরকার, শিলিগুড়ি: উত্তর সিকিমে (Sikkim) বৃষ্টির তীব্রতা কমতেই জল নামছে তিস্তায় (Teesta River)। ছন্দে…
রায়গঞ্জ: নাবালিকাকে অপহরণ(Kidnap) করে লুকিয়ে রাখার অভিযোগে মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। জানা…
সানি সরকার, শিলিগুড়ি: নির্দেশিকার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (SJDA) চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব বুঝে নিলেন…
This website uses cookies.