অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার : প্রতি বর্ষায় পাহাড়ি রাস্তায় ধস নতুন কিছু নয়। তবে এবার বর্ষা নামার আগেই ধস নামল বক্সা পাহাড়ের জিরো পয়েন্ট এলাকায়। সম্প্রতি কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ধস নামায় চিন্তিত বক্সা পাহাড়ের ১৩টি গ্রামের বাসিন্দা থেকে ট্যুরিস্ট গাইডরা।
বক্সার বাসিন্দা তথা ট্যুরিস্ট গাইড জেমস ভুটিয়া বললেন, ‘বর্ষা আসার আগেই রাস্তা ভাঙছে পাহাড়ে। আমাদের যাতায়াতের সমস্যা তো হবেই। পাশাপাশি পর্যটকরা এমন রাস্তা দেখে ঘুরতেও আসতে চাইবেন না।’
মাস ছয়েক আগে জিরো পয়েন্ট থেকে ভিউপয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় এক কিমি রাস্তার কাজ শুরু হয়। অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দপ্তর প্রায় ৪ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা ওই রাস্তা তৈরিতে বরাদ্দ করে। মাটি সমান করে পাথর বিছানো হয়। তবে কংক্রিটের ঢালাই হয়নি। রাস্তার কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ায় ধস নামার আশঙ্কা করছিলেন স্থানীয়রা। চলতি সপ্তাহে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সেই আশঙ্কা সত্যি হল। রাস্তার সংস্কার নিয়েও আশঙ্কার কালো মেঘ দেখা দিয়েছে। রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছে পর্যাপ্ত আর্থিক তহবিল না থাকায় কীভাবে রাস্তা সংস্কার হবে সেই প্রশ্নও মাথাচাড়া দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আর কয়েকবার বৃষ্টি হলেই ওই রাস্তায় বড় ধস নামবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
শনিবার রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সোনাম ডুকপা বলেন, ‘বর্ষার আগেই যেভাবে রাস্তা ভাঙছে সেটা নিয়ে আমরা চিন্তায় রয়েছি। সমস্যাটি ব্লক ও জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফেই রাস্তাটি মেরামত করতে হবে। কিন্তু আমাদের কাছে ওই কাজ করার পর্যাপ্ত ফান্ড নেই।’
বক্সা পাহাড়ের জিরো পয়েন্ট পর্যন্তই গাড়ি পৌঁছায়। তারপর পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটাপথই একমাত্র ভরসা। নতুন রাস্তার কাজ শুরুর আগে জিরো পয়েন্ট ও ভিউপয়েন্টের ওই রাস্তায় বড় বড় পাথর ছিল। সেই কারণে গত কয়েক বছরে ধসের পরিমাণ কম ছিল ওই এলাকায়। তবে এবার সেই পাথর সরিয়ে কাজ শুরু হওয়ায় ধসের আশঙ্কা আগেই তৈরি হয়। বৃষ্টির জল নেমে জিরো পয়েন্টের বিভিন্ন জায়গা ক্ষতি করেছে।
বক্সা পাহাড়ের ১৩টি গ্রামের বাসিন্দাদের জিরো পয়েন্ট হয়েই যেতে হয়। পাশাপাশি বক্সা, লেপচাখায় ঘুরতে আসা পর্যটকরাও ওই রাস্তা ধরেই যাতায়াত করেন। ধস নামলেও এখনও পুরো রাস্তার ক্ষতি হয়নি। তবে দ্রুত সংস্কার না হলে পুরো রাস্তাই ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা যথেষ্ট রয়েছে।