আলিপুরদুয়ার: মাদারিহাট বিধানসভার উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই সক্রিয় হয়েছে সব রাজনৈতিক দলই। বুধবার তৃণমূল, বিজেপি ও বামফ্রন্ট প্রত্যেকেই নিজের নিজের মতো করে বৈঠক করে। বামেদের বৈঠকে উঠে এসেছে তাদের নির্বাচনি কৌশলের কথা। সেইসঙ্গে পায়ের তলায় মাটি পেতে তারা কংগ্রেসের হাত ধরতে খুবই আগ্রহী। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক কিশোর দাসের কথায়, ‘তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী ভোট যেন আলাদা না হয় সেজন্যই কংগ্রেসকে পাশে চাইছি আমরা।’
বুধবার আলিপুরদুয়ারে সিপিএমের জেলা কার্যালয়ে বৈঠক করেন জেলা বামফ্রন্টের নেতারা। কিশোর বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকেই আমাদের কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। মাদারিহাট বিধানসভাভিত্তিক একটি নির্বাচনি কমিটি তৈরি হবে সেদিন। সেখানে সব দলের নেতারা থাকবেন। তাঁরাই বিভিন্ন কর্মসূচি ঠিক করবেন।’
কিশোর ছাড়াও এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল দাস, প্রবীণ সিপিএম নেতা কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা আরএসপি’র সম্পাদক সুব্রত রায়। মাদারিহাট উপনির্বাচনে জেতার জন্য কংগ্রেসকে পাশে চাইছে বামফ্রন্ট। তবে বামেরা চাইলেই তো আর হবে না। কংগ্রেস কী চাইছে, সেটা এই মুহূর্তে জেলা রাজনীতিতে চর্চার বিষয়। কংগ্রেস কিন্তু আলাদা প্রার্থী দেওয়ার মানসিকতা নিয়েই এগোচ্ছে। যদিও জেলা নেতারা মুখে বলছেন, এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা।
মঙ্গলবারই মাদারিহাটে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে এসেছেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শান্তনু দেবনাথ। সেখানে তো তিনি বলেই দিয়েছেন এবারের উপনির্বাচনে তাঁরা আলাদা প্রার্থী দিতে চান। কিন্তু বামেরা তো আপনাদের পাশে চাইছেন? এ প্রশ্ন করলে শান্তনুর বক্তব্য, ‘কংগ্রেসের প্রার্থী চাই আমরা। তিনটি নাম কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। যদি বামফ্রন্টের সঙ্গে সমঝোতা হয়, তাহলে ওরা প্রার্থী না দিয়ে আমাদের প্রার্থীকে সমর্থন করুক।’ তবে এখনই সিদ্ধান্তের কথা বলছেন না তিনি। শান্তনু বলছেন, ‘এই আসনে আমাদের প্রার্থী রাখার দাবি জানানো হয়েছে। বাকি রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে।’
বামফ্রন্টও এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য রাজ্য নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে। প্রার্থী কে হবেন, কোন দলের হবেন, সেটাও রাজ্য থেকেই ঘোষণা করা হবে। তবে বামফ্রন্ট সূত্রে খবর, আগেও তো ওই আসনে আরএসপি’র প্রার্থীই দেওয়া হয়েছে। এবারও তাই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। চূড়ান্ত কথা যদিও কোনও দলের নেতাই বলতে নারাজ। আপাতত তাঁরা সাংগঠনিক কাজ এবং প্রচারে জোর দিতে চাইছেন। বৃহস্পতিবার বিধানসভাভিত্তিক নির্বাচনি কমিটি তৈরি হওয়ার পর আগামী ২১ অক্টোবর বিধানসভাভিত্তিক কর্মীসভা করবে বামফ্রন্ট। ২৪ অক্টোবর মনোনয়ন জমা দিতে পারেন বামফ্রন্ট প্রার্থী। এরপর অঞ্চলভিত্তিক কর্মীসভা হবে। আরএসপি’র জেলা সম্পাদক সুব্রত রায় জানিয়েছেন, কর্মীসভার মাধ্যমেই প্রচার চলবে।

