Sunday, May 28, 2023
HomeBreaking News৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের

৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের

কলকাতা: ৩২ হাজার প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে স্থগিতাদেশ। শুক্রবার সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ এমনটা জানিয়েছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয়েছিল ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তাতে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে প্রথম পর্যায়ে ৪২ হাজার ৫০০ জনকে নিয়োগ করে পর্ষদ। অভিযোগ ওঠে, নিয়ম মেনে এই নিয়োগ হয়নি। সেই নিয়ে মামলা হয়। গত ১২ মে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, ৩৬ হাজার নিয়োগ বেনিয়মে হয়েছে। ফলে তাঁদের চাকরি বাতিল করতে হবে পর্ষদকে। কিন্তু বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ‘টাইপো’ থাকায়, ফের রায় সংশোধনের আবেদন জানানো হয়। পরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজের রায় সংশোধন করে জানান, সংখ্যাটা ৩৬ হাজার নয় ৩২ হাজার হবে। ফলে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরির ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। পর্ষদ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে। ৩২ হাজার শিক্ষকের বক্তব্য না শুনেই রায় দেওয়া হয়েছে, এমনটা বলা হয়।

সম্প্রতি, প্রাথমিকে এক ধাক্কায় প্রশিক্ষণহীন ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের বেনজির নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ২০১৬ সালে নিযুক্ত হয়েছিলেন ৪২ হাজার, ৫০০ শিক্ষক। এই নিয়োগে ইন্টারভিউতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এমনকি নিয়োগ পরীক্ষায় অ্যাপটিটিউড টেস্টও নেওয়া হয়নি বলে ইন্টারভিউয়াররাই বিচারপতির কাছে সাক্ষ্য দিয়ে জানান। এই ঘটনায় জোর শোরগোল শুরু হয়ে যায় রাজ্যজুড়ে। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ দেখান চাকরিহারারা। এদিকে রাজ্যরাজনীতিতেও ব্যাপক আলোড়ন পড়ে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রায়ে জানান, আগামী ৪ মাস চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারবেন। তবে পার্শ্বশিক্ষকের বেতনের হারে বেতন পাবেন। ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পর্ষদকে মামলা করার অনুমতি দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।

ন’বছর আগের টেটের নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে আদালতে মামলা করেছিলেন নিয়োগ না পেয়ে অপ্রশিক্ষিত চাকরিপ্রাথী প্রিয়াংকা নস্কর সহ আরও ১৪০ জন। তাঁদের হয়ে মামলা করেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তিনি দাবি করেছিলেন, এই প্যানেলের ৪২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকে মেধার ভিত্তিতে সঠিক ভাবেই চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু বাকিদের চাকরি নিয়ে তদন্তের দাবি জানান তিনি।

মামলাকারীরা আদালতে জানিয়েছিলেন, সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে নম্বর বিভাজন-সহ তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁদের থেকে কম নম্বর পেয়েও অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছেন। এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর আগে এই মামলার শুনানিতেই হাইকোর্টে ডেকে আনা হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যকে। পরে ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলেয় রায় সংশোধন করে নেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, দু’টি ভুলের কথা বলা হয়েছিল। রায়ের ‘টাইপোগ্রাফিক্যাল’ ভুল নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলকারীদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। প্রথমটি ছিল, প্যানেলের সর্বনিম্ন নম্বর রায়ে লেখা হয়েছে ১৪.১৯১। দ্বিতীয় ভুলটি ছিল, ৩৬ হাজারের নিয়োগে ত্রুটি হয়নি। সংখ্যাটা কিছুটা কম। এরপর বিচারপতি চাকরি বাতিলের সংখ্যা কমিয়ে নেন। পাশাপাশি এও জানান, সর্বনিম্ন নম্বর সংশোধন করে হবে ১৩.৭৯৬।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments