উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক : দুর্নীতি হচ্ছে দেখে আদালত কি চুপ করে বসে থাকবে? প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় এমনই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হন ১ লক্ষ ২৫ হাজার প্রার্থী। ২০১৬ সালে তাদের মধ্যে ৪২ হাজার ৯৪৯ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। যেই নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলা উঠলে তিনি ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দেন। তবে চাকরি বাতিল হলেও শিক্ষকদের স্কুলে যাওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। ৩ মাসের মধ্যে রাজ্যকে নতুন নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার। প্রাথমিকভাবে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয় বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও যায় রাজ্য সরকার। যদিও সুপ্রিম কোর্ট ফের মামলা হাইকোর্টে ফেরত পাঠায়। সেই মামলার শুনানিতেই এদিন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, ‘আদালত যদি দেখে যে, যথেচ্ছ দুর্নীতি হচ্ছে, প্রশাসনিক কর্তারা যুক্ত আছেন, মন্ত্রী যুক্ত আছেন তখন আমরা কী করব? কিছুই করব না?’ এদিন শুনানিতে বিচারপতির গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ, সবাই চুপচাপ থেকে গেছে। দুর্নীতি হয়েছে অথচ হস্তক্ষেপ করতে বারণ করছে।
এদিন চাকরি হারানো ৭০৫ জনের পক্ষে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র। তিনি বলেন, ‘এই ৭০৫ জন প্রার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ২০১৭ সালে তাঁদের নিয়োগ করা হয়। এর পর পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। বোর্ড যদি পদ তৈরি করে নিয়োগ দেয়, তার দায় কি প্রার্থীদের ঘাড়ে চাপানো যায়?’ তিনি সওয়াল করেন, ‘বোর্ডের দেওয়া রিপোর্টে কোথাও বলা হয়নি যে এই নিয়োগ বাতিলযোগ্য। তদন্তে কোনও প্রমাণ মেলেনি যাতে বলা যায় দুর্নীতির ভিত্তিতে এঁদের বাদ দিতে হবে। অনেকেই প্রভাবিত হয়েছেন, অথচ তাঁদের পার্টি করা হয়নি। নম্বর বিভাজনেও বিভ্রান্তি রয়েছে, বিভিন্ন জেলার মধ্যে অ্যাপটিটিউড টেস্ট ও ইন্টারভিউ নম্বরে পার্থক্য ছিল। ফলে নম্বরের ভিত্তিতে কারও নিয়োগ বাতিল ঠিক নয়।’ এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার।