চ্যাংরাবান্ধাঃ সমবায় গোষ্ঠীর দুটি সংসদের চেয়ারপার্সন ও বোর্ড মেম্বারদের একাংশ দুর্নীতিগ্রস্ত। তাঁদের অপসারণের দাবিতে চ্যাংরাবান্ধা গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংঘ সমবায়ের অফিসে তালা ঝোলালেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। শুক্রবার দুপুরে সমবায়ের অফিসে জমায়েত হন ৬ ও ১১ নম্বর সংসদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। সেখানে দুর্নীতিগ্রস্তদের অপসারণের দাবিতে তাঁরা সোচ্চার হন।
গত অগাস্ট মাসে বোর্ড মেম্বাররা চেয়ারপার্সন ফিরদৌসি খাতুনকে বদলে নতুন চেয়ারপার্সন তমিনা খাতুনকে নিযুক্ত করেন। তখন থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। সেই সময় অফিস বেশ কিছুদিন তালাবন্ধ ছিল। পরবর্তীতে মেখলিগঞ্জ থানায় অভিযোগ জানিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে তালা ভেঙে অফিসে ঢোকেন সংঘ সমবায়ের বোর্ড সদস্যরা। এদিন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ফের তালা ঝুলিয়ে দেন সমবায়ের অফিসে। এই খবর পাওয়া মাত্রই সমবায়ের অফিসে হাজির হয় মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশ। তাদের শত অনুরোধ উপেক্ষা করে তালা খোলেননি আন্দোলনকারীরা।
এই প্রসঙ্গে ১১ নম্বর সংসদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য জ্যোৎস্না খাতুনের অভিযোগ, “বোর্ডের চেয়ারপার্সন তমিনা খাতুন দুর্নীতি পরায়ন। বিগত বহুদিন থেকেই তার দুর্নীতি সহ্য করে আসছি। তাকে অপসারণ করে রুমি বেগমকে বোর্ডের চেয়ারপার্সন করা হোক। এজন্য বিডিওর কাছেও দাবি জানিয়েছি। আমাদের দাবি না মানা অবধি অফিসে তালা ঝুলবে।”
৬ নম্বর সংসদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সালেমা খাতুনের বক্তব্য, “আমাদের বোর্ড মেম্বার অনিমা রায় নানা ভাবে দুর্নীতি করেছেন তার বদলে বোর্ড মেম্বার হিসাবে কল্পনা রায়কে নেওয়া না হলে আমাদের আন্দোলন চলবে।”
এই নিয়ে সংঘের কো-অর্ডিনেটর সাহেনা খাতুন বলেন,”এদিন দুটি সংসদ এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা এসে আমায় অফিস ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বলেন। আমি বলি অফিসের সময় কোথাও যাব না। তখন তারা বলেন তারমানে আপনিও জড়িত এই দুর্নীতি সঙ্গে। কেউ কিছু বলতেই পারে। কিন্তু আসল সত্য সকলেই জানে। আমি অফিসের কর্মচারী। বোর্ড মেম্বাররা যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই হবে।”
সংঘের সম্পাদক বানু বেগমের মন্তব্য, “আমাদের এখানে মোট ১৪টি সংসদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোকজন আছে। দুইটি সংসদের জন্য বাকি বারোটার কাজ কর্ম বন্ধ থাকতে পারে না। আমরা এই নিয়ে মেখলিগঞ্জ থানার দারস্থ হব। এদিকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে ১১ নম্বর সংসদের চেয়ারপার্সন তমিনা খাতুন জানান, তিনি কোনও দুর্নীতিতেই যুক্ত নন। সবটাই প্রাক্তন চেয়ারপার্সন ফিরদৌসি খাতুন এর প্ররোচনায় হচ্ছে।
এই নিয়ে মেখলিগঞ্জের বিডিও অরিন্দম মণ্ডল বলেন,”স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বোর্ড মেম্বার বদল নির্বাচনের মাধ্যক্মে হয়ে থাকে। আমার হাতে কিছু নেই। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে সংঘের অফিসে তালা দেওয়া একদম ঠিক হয়নি।”
যদিও সমবায়ের অফিসে তালা মারার বিষয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি মেখলিগঞ্জ থানার। ওসি মণিভূষণ সরকার বলেন,”অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত শুরু করব।”