সায়ন ঘোষ, কলকাতা: ‘নতুন প্রজন্মের বিরুদ্ধে নিজেকে যাচাই করতে চাই’- বক্তা দাবার রাজা ম্যাগনাস কার্লসেন। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর কলকাতায় পা রেখেছেন নরওয়ের এই দাবাড়ু। বুধবার থেকে শুরু হতে চলা টাটা স্টিল চেজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছেন তিনি। তার আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কার্লসেন বলেছেন, ‘আমি সবসময় নতুন প্রজন্ম খেলায় কতটা উন্নতি করছে, তা জানার জন্য মুখিয়ে থাকি। আগের তুলনায় ওরা আদৌ উন্নতি করেছে কিনা, সেটা দেখতে চাই।’
বুধবার প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী ম্যাচেই ম্যাগনাস মুখোমুখি হবেন ভারতীয় গ্র্যান্ড মাস্টার রমেশবাবু প্রজ্ঞানানন্দের। এর আগেও বেশ কয়েকবার ভারতীয় দাবার বিস্ময় বালকের বিরুদ্ধে খেলেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, প্রজ্ঞার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন ম্যাগনাস। এবারেও তার অন্যথা হয়নি। পরিষ্কার বলে দিলেন, ‘প্রজ্ঞার মধ্যে লড়াই করার মানসিকতা রয়েছে। ও প্রচণ্ড উচ্চাকাঙ্ক্ষী খেলোয়াড়। সবসময় জিততে চায়। একটা খুব উত্তেজক ম্যাচ হতে চলেছে।’
শুধু প্রজ্ঞা নয়, ভারতীয় দাবার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিয়ে বেশ আশাবাদী ‘দাবার রাজা’। ডোম্মারাজু গুকেশ, অর্জুন এরিগাইসিদের বিরুদ্ধে খেলা যে কঠিন তা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। ম্যাগনাস বলেছেন, ‘গত ১৫-২০ বছরে ভারতীয় দাবা অনেক উন্নতি করেছে। বর্তমান প্রজন্মের ভারতীয়রা অন্য দাবাড়ুদের থেকে আলাদা। ওদের খেলার স্টাইলও অন্যরকম। এই প্রজন্মের ভারতীয় দাবাড়ুদের বিরুদ্ধে খেলা সত্যি কঠিন।’ তবে ভারতীয় দাবাপ্রেমীদের নিয়ে বিরক্ত তিনি। ম্যাগনাস অভিযোগ করেছেন, ভারতীয় সমর্থকরা খেলার চলাকালীন বেশ বিরক্ত করে। তাই তিনি সহজে ভারতে আসতে চান না।
কয়েকদিন আগেই সর্বকনিষ্ঠ দাবাড়ু হিসেবে ফিডে রেটিং পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে কলকাতার খুদে দাবাড়ু সাড়ে তিন বছরের অনীশ সরকার। এদিন নিজের মায়ের সঙ্গে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল অনীশ। তাঁর সঙ্গে হাসিমুখেই ছবি তোলেন ম্যাগনাস। পরে কলকাতার এই বিস্ময় শিশুকে নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘অনীশ অসাধারণ কৃতিত্ব অর্জন করেছে। তবে ওর উচিত ফিডে রেটিং, চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে না ভেবে দাবাকে উপভোগ করা।’
কার্লসেন কিন্তু আলাদা করে কাউকে নিজের আদর্শ বলে মনে করেন না। প্রাক্তন ও বর্তমান সকলের থেকেই তিনি শিখতে চান। কার্লসেন বলেছেন, ‘আমি আলাদা করে কোনওদিন কাউকে নিজের আদর্শ বলে মনে করিনি। সবসময় প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড়দের থেকে শিখতে চেয়েছি।’
এদিকে, বুধবার কলকাতায় পা রাখছেন কিংবদন্তি ভারতীয় দাবাড়ু বিশ্বনাথন আনন্দ।