তমালিকা দে, শিলিগুড়ি: পাহাড়ি পথে চলতে চলতে স্বাগত জানাবে রঙিন ফুলগুলো। নভেম্বরের শুরুতেই গোলাপি, সাদা চেরি ব্লসম (Cherry Blossom) ফুটেছে দক্ষিণ সিকিমে (South Sikkim)। ফুলের নামটি শুনলে প্রথমেই মনে পড়ে জাপানের কথা। সে দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর হস্তশিল্পের সঙ্গে যা জড়িয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে। এদেশের পাহাড়ি রাজ্যেও চেরি ব্লসম পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণের। সেই কথা জানে সিকিম সরকার।
তাই স্থানীয় পর্যটনের প্রচারে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে তারা। পাশাপাশি অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম (অ্যাক্ট) সিকিমে আয়োজিত চেরি ব্লসম অটাম ফেস্টিভালের প্রচারে সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলার পড়শি রাজ্যে চেরি ব্লসমের সৌন্দর্য সবথেকে বেশি উপভোগ করা যায় টেমি চা বাগান থেকে। দু’পাশে সারি সারি চা গাছ। মাঝের রাস্তার ধার বরাবর ফুটে রয়েছে সেই ফুল। দৃশ্যের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে কাঞ্চনজঙ্ঘা। টেমি চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় ২০১৭ সাল থেকে আয়োজিত হচ্ছে চেরি ব্লসম অটাম ফেস্টিভাল। নভেম্বর মাসে তিনদিন ধরে চলে অনুষ্ঠান। প্রশাসনিক কারণে এখনও পর্যন্ত এবছরের তারিখ ঠিক হয়নি। তবে চলতি মাসেই ফেস্টিভাল হবে।
সিকিমের সংস্কৃতি দপ্তরের আধিকারিক তাশি শিরিং ভুটিয়া বলছেন, ‘চেরি ব্লসম দেখতে এখন দেশ-বিদেশের প্রচুর পর্যটক আসছেন এখানে। স্বাভাবিকভাবে স্থানীয়দের ব্যবসা বেড়েছে। সারাবছরের তুলনায় এইসময় এক অন্যরকম সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।’ বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রের বিশেষত্ব প্রচারে আনা হচ্ছে পর্যটকদের টানতে। যাতে আরও বেশি সংখ্যক ভ্রমণপিপাসু সেই বিশেষ সময়ে আসেন নির্দিষ্ট জায়গায়। দক্ষিণ সিকিমে পথের ধারে ফুটে থাকা চেরি ব্লসম এসেছে সেই প্রচারের আলোয়। কলকাতা থেকে ঘুরতে এসেছিলেন অন্বেষা মণ্ডল। বললেন, ‘রাবাংলা ঘুরতে এসে চেরি ব্লসম দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে। সেই দৃশ্য বলে বোঝানো যায় না। টেমি বাগান ঘুরতে গিয়ে চেরি ব্লসম দেখে মনে হচ্ছিল, কেউ যেন চারপাশ সাজিয়ে দিয়েছে। ওই ফুলগুলোর জন্য ছবির মতো সুন্দর হয়ে উঠেছে দক্ষিণ সিকিম।’ জাপানের (Japan) চেরি ব্লসমের বিশ্বজোড়া খ্যাতি। সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে জাপান যাওয়ার সময় বা সুযোগ খুব কমজনের থাকে। সিকিমে এসে তার কিছুটা অনুভূতি পেয়ে উচ্ছ্বসিত দিল্লির বাসিন্দা সৌভিক আগরওয়াল। জনপ্রিয়তা কতটা, স্পষ্ট করলেন অ্যাক্টের কনভেনার রাজ বসু। তিনি অকপট, ‘পর্যটকদের মধ্যে দিন-দিন চেরি ব্লসমের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সিজনে তাই পর্যটন ব্যবসাও লাভের মুখ দেখছে।’