উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ চোপড়ায় এক যুগলকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে এক তৃণমূল নেতা তাজম্মুল ওরফে জেসিবি। সেই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হতেই জেসিবিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তরুণ-তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা জেসিবির পাশে দাঁড়িয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানকে ইতিমধ্যে শোকজ করেছে দল। মঙ্গলবার রাতে ফোনে বিধায়কের সঙ্গে কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধায়ক হামিদুলের দাবি, শালিশি সভা যাতে আর না হয় সেটাই দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার বিধানসভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে যান হামিদুল, সেখানেই সাংবাদিকদের তিনি জানান, জেসিবির মাথার উপরে তার হাত কোনও দিন ছিল না, তাই হাত তুলে নেওয়ার প্রশ্ন নেই। পরে তড়িঘড়ি ট্যাক্সিতে উঠে বিধানসভা চত্বর ছাড়েন হামিদুল।
নির্যাতিতা যুগল সম্পর্কে কী বলেছিলেন চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান? অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা জেসিবির পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার পরই বিধায়ক বলেছিলেন, নির্যাতিতা যুবতী অসামাজিক কাজে জড়িত ছিলেন। তাঁকে শাসন করতে গিয়ে একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে জেসিবি। মুসলিম রাষ্ট্রে এমন বিচার হয়েই থাকে! বুধবার বিধানসভায় এসেছিলেন বিধায়ক হামিদুল। তাঁর কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, নিজের মন্তব্যের জন্য তিনি কি অনুতপ্ত? জবাবে তৃণমূল বিধায়ক পাল্টা প্রশ্ন তোলেন, “প্রধান অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ, এখন এসব কথা বলার কি অর্থ?”একই সঙ্গে বিধায়কের দাবি, “আমি কোনও অসম্মানজনক মন্তব্য করিনি। অন্যায় হয়েছিল বলেই বলেছিলাম। কিন্তু আমার মন্তব্যকে বিকৃত করা হয়েছে, তাতে মহিলার অসম্মান হওয়ার জন্য আমি দুঃখপ্রকাশও করেছি।” বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, বিধায়কের প্রশ্রয়েই জেসিবির বাড়বাড়ন্ত। বেকায়দায় পড়ে এখন দায় এড়াতে চাইছেন বিধায়ক।
রবিবার সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশ্যে আনেন। সেখানের দেখা যায় পরকীয়ার অভিযোগ এনে শালিশি সভা ডেকে রাস্তায় ফেলে যুগলকে লাঠি, চুলের মুঠি ধরে পেটাচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা জেসিবি। সেই দৃশ্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করছেন বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা।(যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ)। এরপরই নিজের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তাজম্মুলের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে নির্যাতিতা মহিলার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্কে জড়ান বিধায়ক হামিদুল। যার জেরে অস্বস্তিতে পড়তে হয় শাসকদলকে। সেই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল দলের নির্দেশে হামিদুলকে শোকজ করেন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।