স্বরূপ বিশ্বাস, কলকাতা: দল, সরকার ও প্রশাসনে একের পর এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সব ক্ষেত্রেই তাঁর সুপ্রিম কর্তৃপক্ষ বজায় রাখতে কোনও কিছুতেই পিছপা হচ্ছেন না তিনি। হঠাৎ করে নয়, একেবারে আগাম স্পষ্ট আভাস দিয়েই নতুন করে দায়িত্ব বণ্টন করা, একজনের নির্দিষ্ট জায়গা বদলে দেওয়া সবই করে চলেছেন তিনি। যা রীতিমতো সাড়া ফেলেছে শাসকদল তৃণমূল (TMC), সরকার ও প্রশাসনের অন্দরমহলে। এখনও বাদ রয়েছে তাঁর মন্ত্রীসভায় রদবদলের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা। যে কোনওদিন সেই পদক্ষেপও করবেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার তৃণমূল ও নবান্ন সূত্রের খবর সেরকমই।
তবে এত কিছুর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রীর পরপর এই পদক্ষেপের মাঝে দলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কার্যত নীরবতা রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ।’ অভিষেকের এই প্রসঙ্গে নীরবতা নিয়ে দলের বিভিন্ন মহলের ব্যাখ্যা ভিন্ন ভিন্ন। দলে প্রভাবশালী এক শীর্ষ নেতার মন্তব্য, ‘তৃণমূলে নম্বর টু বলে কিছু নেই। দিদিমণিই সব ক্ষেত্রে শেষ কথা।’
অভিষেক ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, তাঁর সঙ্গে শলাপরামর্শ করেই নেত্রী পদক্ষেপ করছেন। এই নিয়ে জল্পনার কোনও অর্থ হয় না। কৌশলগত কারণেই দলের নেত্রীর বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিয়ে অভিষেক কোনও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ্যে দিচ্ছেন না। দলনেত্রীর সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিয়ে কোনও মন্তব্য করে দলে ও বাইরে বিতর্ক চান না অভিষেক। তিনি বরাবর বলে এসেছেন, মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রীই দল ও সরকারের শেষ কথা।
এসবের পরেও তৃণমূলের অন্দরের খবর, নেত্রীর দল, সরকার ও প্রশাসনে পর পর বিভিন্ন পদক্ষেপে দলনেত্রীর সঙ্গে অভিষেকের দূরত্ব একটু হলেও বাড়ছে। অভিষেকের নীরবতাই তার প্রমাণ। নিজের কেন্দ্রে অভিষেকের ডক্টরস কনভেনশন, লাগাতার স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজনও নেত্রী ভালো চোখে নেননি বলেই দলের খবর। দলেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি সরকারের জেলা ও ব্লকস্তরে স্বাস্থ্য প্রশাসনে ব্যর্থতাই এক্ষেত্রে স্পষ্ট হয় না?
যদিও নেত্রীর সঙ্গে অভিষেকের এই দূরত্ব ও ভুল বোঝাবুঝিতে তৃণমূলে প্রবীণ নেতাদের মধ্যে এখন কিছুটা স্বস্তির হাওয়া। দলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেত্রী এখন দলের প্রবীণ নেতাদের গুরুত্ব দিচ্ছেন। এতেই তাঁরা স্বস্তি বোধ করছেন বলে এক প্রবীণ নেতার দাবি। অভিষেক বরাবর নবীন নেতৃত্বের পক্ষে। তাঁর দলে রদবদলের সদ্য সুপারিশে তা স্পষ্ট। যদিও এখনও তা মেনে নেননি দলনেত্রী। এটাও তাঁর সঙ্গে দলনেত্রীর বর্তমান দূরত্ব তৈরির অন্যতম কারণ।