কলকাতা: এগরায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা দাবি করেন, ওডিশা সীমান্তের ওইসব এলাকায় বেশকিছু বেআইনি বাজি কারখানা রয়েছে। যে কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার মালিককে আগেই রাজ্য পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। মালিক ওডিশার দিকে পালিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। বিজেপির দিকে আঙুল তুলে মমতা বলেন, ‘২ মাস আগে বিজেপি ওই এলাকায় নির্দলকে সমর্থন করে পঞ্চায়েত তৈরি করে। তাদের তো খবর রাখা উচিত ছিল যে আবার নতুন করে এসব হচ্ছে।’
মমতা জানান, এগরার ঘটনার তদন্ত করবে সিআইডি। পাশাপাশি দমকলের কাছ থেকেও রিপোর্ট নেওয়া হবে। এদিন পুলিশ সুপার নিজেও যান ঘটনাস্থলে। ওখানে বিজেপির পঞ্চায়েত। তাঁদের যে বিধায়করা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন, তাঁদের প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিরোধীদের তোলা এনআইএ তদন্তের দাবি প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘এনআইএ তদন্ত করে বিচার হলে হোক, আমাদের আপত্তি নেই। আমাদের কেউ এ ব্যাপারে জড়িত নয়। তবে আসল ব্যক্তি যেন ধরা পড়েন। রাজনীতির উর্ধ্বে গিয়ে তদন্ত করতে হবে। যে অন্যায় করেছে, তার শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’ পুলিশকে পুলিশের কাজ করতে দিতে হবে।
কারখানার মালিক তৃণমূল কর্মী, বিজেপির এই দাবি প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘যদি তিনি তৃণমূলের লোক হতেন, তাহলে বেআইনি বাজি কারখানা চালানোর জন্য কেন রাজ্য পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করল? কিছুদিন আগে পঞ্চায়েতটা কিনে নিয়েছে বিজেপি। সুতরাং আমাদের পঞ্চায়েতও নেই। ওদের বলুন রাজনীতি না করতে। এটা বিজেপি, তৃণমূল বা সিপিএমের ব্যাপার নয়।’ আইসি-কে শোকজ করে জিজ্ঞেস করতে হবে, কেন ওই ব্যক্তি জামিন পাওয়ার পর আবার একই কাজ করছেন। এদিন এগরার ঘটনায় হতাহতদের আর্থিক ক্ষতিপূরণও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, এদিন দুপুরে এগরার খাদিকুলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। এখনও ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু ও ৭ জনের আহও হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে এলাকার রাস্তায় ছিন্নভিন্ন দেহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বিস্ফোরণের জেরে বাজি কারখানাটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে যায়। বিস্ফোরণের জেরে আগুন লেগে যায় একটি বাড়িতেও। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকল। অনেকেরই অনুমান, ওই কারখানায় বাজি তৈরির আড়ালে বোমা তৈরি হত। সেখান থেকেই এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় পেছনে অন্য কিছু কারণ রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।