অনসূয়া চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: পড়াশোনা কিংবা কর্মসূত্রে কমবেশি অনেকেই পাড়ি দেন কলকাতায়। কেউ কেউ আবার সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দাও হয়ে ওঠেন। তবে এবার উলটো ছবি দেখা গেল শহর জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri)। মানুষ নয় বেশ কিছু রঙিন মাছ স্থায়ী ঠিকানা গড়তে ব্যস্ত এই শহরে৷ এই সব মাছ উত্তরপ্রদেশের রবি, বিশাল, সুনীলদের হাত ধরে পৌঁছে যাচ্ছে শহরের বিভিন্ন পাড়ায়।
অনেকে মনে করেন, রঙিন মাছের জলকেলি দেখলে মন ভালো থাকে। তাই বাড়ি বা ফ্ল্যাট কালচার যাই হোক না কেন, অ্যাকোয়ারিয়াম রাখতে কমবেশি অনেককেই দেখা যায়। আর সেই শখে একটু ইন্ধন জোগাতে উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রায় ১০ জন এসেছেন জলপাইগুড়ি শহরে।
সকাল হলেই জার নিয়ে বসে পড়েন শহরের বিভিন্ন প্রধান রাস্তার পাশে। তবে আশপাশে থাকতে হবে জলের ব্যবস্থা। বাইক থেকে সব জার নামিয়ে প্রথম কাজ জারগুলোতে জল ভরে তাতে গোল্ড ফিশ, অ্যাঞ্জেল ফিশ ছেড়ে দেওয়া। কাচের জারে রঙিন মাছের জলকেলি মন কাড়ছে পথচলতি মানুষজনের। ব্যাস পছন্দ হলে এবং দােম পোষালে কলকাতার মাছেদের স্থায়ী আস্তানা হচ্ছে নিউটাউনপাড়া, পান্ডাপাড়া, মাষকালাইবাড়ির গৃহস্থদের বাড়ি।
ক্রেতা নির্মাল্য প্রামাণিেকর কথায়, ‘ফ্ল্যাটে বড় অ্যাকোয়ারিয়াম রাখার জায়গা নেই। মেয়ে অনেকদিন ধরেই জেদ করছিল অ্যাকোয়ারিয়ামের। হাতের নাগালে ছোট জার ও মাছ পেয়ে কিনে নিলাম। এদের কাছে রঙিন পাথর সহ অ্যাকোয়ারিয়াম সাজানোর সরঞ্জামও আছে। সেগুলোও কিনে নিলাম।’
মাছ সহ জারের দাম সাধ্যের মধ্যেই রেখেছেন বলে জানালেন বিক্রেতা রবি কুমার। বললেন, ‘জলপাইগুড়ি শহরের মানুষের রঙিন মাছ,অ্যাকোয়ারিয়ামের প্রতি ভালোবাসা আছে। দুটো মাছ সমেত জারের সাইজ অনুযায়ী ২৫০, ৩৫০, ৪৫০ টাকা দাম রেখেছি। তবে দর কষাকষিতে কমবেশি হয়ে যায়।’
বিক্রেতা বিশাল কুমারের কথায়, ‘কলকাতা থেকে নিয়ে আসার পর খাওয়ানো থেকে জল পরিষ্কার – সব আমরাই করি। বিক্রির সময় একটু খারাপ লাগে। কিন্তু কিছু করার নেই। পেটের দায়ে এই শহরে আসা। বিক্রি তো করতেই হবে। ঘর ভাড়া থেকে বাড়িতে টাকা পাঠানো সবই নির্ভর করে বিক্রির ওপর।’