এক-একটা ভোটে এক-একটা কথা অনেক কথার ভিড় ঠেলে সামনে আসে। অনেক শব্দ। একদা ‘গরিবি হটাও’ থেকে ‘শাইনিং ইন্ডিয়া’, ‘অচ্ছে দিন’ থেকে ‘বিকশিত ভারত’ কত শব্দ শোনা যায় ভোটের মরশুম এলে। সেসব কথা নিয়ে চর্চা হয়, নানারকম বাকবিতণ্ডা চলে। তারপর আবার সেসব আরও নতুন নতুন কথার ভিড়ে হারিয়ে যায়।
এবারের ভোটে একটা নতুন শব্দ বাতাসে ঘুরছে। বাইনারি। কথাটা ইংরেজি। বাংলা করলে মানে দাঁড়ায় দুই পক্ষ। দুই শিবির। বাইনারি কথাটা এসেছে বাম শিবির থেকে। তাদের দিক থেকেই বারবার কথাটা উঠছে। প্রসঙ্গ এ রাজ্যে রাজনৈতিক ছবিটা। বামেদের অনুযোগ, এখানে এবার পুরো ছবিটা দেখা বা দেখানো হচ্ছে দুই পক্ষ ধরে। একদিকে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল, অন্যদিকে দিল্লির শাসক বিজেপি। এমনভাবে দেখানো হচ্ছে যেন দুই পক্ষের মাঝে আর কেউ নেই, কিছু নেই। লড়াই যা হচ্ছে তা তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যেই।
অথচ দুই পক্ষের মাঝে সিপিএম রয়েছে, কংগ্রেস রয়েছে। তাদের দিকে কেউ ফিরেও তাকাচ্ছে না। কেউ বলতে খবরের কাগজ আর টিভিওয়ালারা। দিল্লি থেকে যেসব পদ্মনেতারা ঘনঘন বাংলায় আসছেন তাঁরাও ভুলে বামেদের নিয়ে উচ্চবাচ্য করছেন না। যেন বাংলায় বাম বলতে কিছু নেই। বামের জায়গা রাম নিয়েছে। এই বাইনারির কারণ হিসেবে এবার জুড়েছে কর্পোরেট মদতের ব্যাখ্যা। বিভিন্ন মিডিয়া হাউসকে বড় বড় বিজেপি বান্ধব শিল্পপতিরা কিনে নিয়েছে। তাই তারা কোনওমতেই বাম দলগুলিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে না ধরার ফরমান জারি করেছে। এজন্যই নাকি এই বাইনারির বাইরে আর কিছু দেখতে পারছে না সংবাদমাধ্যম।
তার উপর নির্বাচনি বন্ড নিয়ে বাজার যখন তোলপাড় তখন তো বেশ জোরদার হবেই সেটিং তত্ত্ব। দুই শাসকদল নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করে দিব্যি ভোটের পর ভোট খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। একটাই উদ্দেশ্য, বামেদের কোনও জায়গা না দেওয়া। দীর্ঘদিন এখানে লড়াই ছিল কংগ্রেস আর বামেদের মধ্যে। তারপর কালক্রমে বাম আর তৃণমূলের। সেটাও কি বাইনারি ছিল না?
আসলে এই লড়াইয়ে কারা প্রতিপক্ষ তা ঠিক করে দেন ভোটাররা। কোন দল সরকারে আসবে তা যেমন তাঁরা ঠিক করেন, তেমনই ঠিক করে দেন কে হবে প্রধান বিরোধী। বিধানসভার শেষ ভোটে বাম পেয়েছিল ৪.৭৩ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস পেয়েছিল ২.৯৩ শতাংশ। দুই দলের যে এখন একজন বিধায়কও নেই তা মনে করিয়ে লজ্জা দেওয়ার কোনও মানে হয় না। ২০১৬ সালেও বামেদের ছিল ২৬টা আসন, ১৯.৭৫ শতাংশ ভোট। কংগ্রেসের ৪৪ বিধায়ক আর ১২.২৫ শতাংশ ভোট। সেই ভোটে তৃণমূল পেয়েছিল ৪৭.৯ শতাংশ আর বিজেপি ৩৮.১ শতাংশ।
অর্থাৎ প্রধান দুই পক্ষের সঙ্গে বাকিদের ফারাকটা বিশাল। এই ব্যবধান কী করে হল, কেন হতে দিলেন ভোটাররা সে প্রশ্ন উঠবে না? কী করে রাতারাতি মুছে দেওয়া যাবে চৌত্রিশ বছরের স্মৃতি। বামেরা মসনদ হারিয়েছে নয় নয় করে বছর তেরো হয়ে গেল। এই সময়ে তারা এমন কী করেছে যাতে মানুষজন তাদের আবার পুরোনো জায়গা ফিরিয়ে দেবেন? ধীরে ধীরে বিরোধী পরিসর দখল নিয়েছে বিজেপি। দুই থেকে সাতাত্তর হয়েছে, শূন্য থেকে আঠারো। কী করে হল? সব দোষ বাইনারির? এখানে বিজেপির থেকেও লাগাতার মমতা এবং তৃণমূলকে গালমন্দ করে এসেছে বামেরা। কিন্তু তার থেকেও কয়েকগুণ বেশি জোরে তৃণমূলকে আক্রমণ করে সামনে চলে এসেছে বিজেপি। এই যে সন্দেশখালি নিয়ে এত তোলপাড় তা নিয়েও তো বাজার মাত করেছে কেন্দ্রের শাসকদল। কোথায় বিপ্লবী বামেরা!
সুতরাং যত তাড়াতাড়ি নিজেদের দোষ কবুল করে সব দোষ বাইনারির ঘাড়ে দেওয়া বন্ধ করবে, ততই হয়তো হালে পানি পাবে আলিমুদ্দিন। নইলে অধীরের ভরসায় মুর্শিদাবাদের দিকে তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে আরও অনেকদিন।
শিলিগুড়ি: সন্তান জন্মের পর থেকেই বাড়ির বৌকে যৌন ব্যবসায় নামানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন খোদ স্বামী…
শিলিগুড়ি: স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই গৃহবধূকে অত্যাচারের অভিযোগ শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। দুই কন্যা সন্তান…
মানিকচক: তৃণমূল (TMC) অঞ্চল সভাপতিকে প্রাণে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল কংগ্রেসের (Congress) বিরুদ্ধে। মালদার মানিকচকের…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক : নন্দীগ্রাম গণহত্যা নিয়ে ফের বিস্ফোরক মমতা। এবার নাম না করে…
মালদা: নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষীর যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল মালদা জেলা আদালত। এছাড়া…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বিচারপতির চেয়ার ছেড়ে জনতার দরবারে হাজির হয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguli)।…
This website uses cookies.