সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি: রাস্তার ধারে লাল শালুতে মোড়া সারি সারি হাঁড়ি। কোথাও ফুটপাথেই কাটা হচ্ছে সবজি। রান্নাঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছে আরশোলা, টিকটিকি। শহরের (Siliguri) অধিকাংশ বিরিয়ানি (Biryani Shop) ও ফাস্ট ফুডের দোকানে এটাই চেনা ছবি। সস্তার খাবারের লোভে দিব্যি অনেকে খেয়েও নিচ্ছেন তা। কিন্তু কী খাচ্ছেন, তা জানেন কী!
ভাগাড়ের মাংস (Rotten Meat) নিয়ে বছর ছয়েক আগে হইচই হয়েছিল গোটা রাজ্যে। ভাগাড় থেকে মরা জন্তুর দেহাংশ তুলে এনে খাবারের প্লেটে সাজিয়ে দেওয়ার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেছিল কলকাতা পুলিশ। ঘটনার পর শিলিগুড়িতেও প্রশাসনের কর্তারা বিভিন্ন খাবারের দোকান, রেস্তোরাঁয় অভিযান শুরু করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, খাবারের মান যাচাই করা। কয়েকদিন চলার পর অবশ্য ইতি পড়েছে ওই অভিযানে। তারপর আর কোনও নজরদারি চোখে পড়েনি।
সোমবার দিনহাটা শহরে অভিযান চালিয়ে দুটি বিরিয়ানির দোকানের ফ্রিজ থেকে পচা মাংস উদ্ধার হয়। তারপরই শিলিগুড়িতে চর্চা চলছে বিরিয়ানি, ফাস্ট ফুডের দোকানের খাবারের মান নিয়ে। শহরবাসীর মনে প্রশ্ন, যে চিকেন বা মাটনে কামড় বসাচ্ছি, তা বাসি-পচা নয় তো! পিনাকী দে, রূপশ্রী চক্রবর্তীর মতো অনেকের মনেই বিরিয়ানির মাংস নিয়ে সন্দেহ জাগছে। পিনাকী বলছেন, ‘যখন রান্না হয়, তখন তো আর আমরা চোখে দেখি না। কোথা থেকে মাংস আসছে, বা কতদিন ধরে সেই মাংস ফ্রিজে রাখা হচ্ছে, তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু অনেকসময় এসব বিচার না করেই আমরা ওই বিরিয়ানি খাচ্ছি।’
আগে পুরনিগমের ফুড ইনস্পেকটর গণেশ ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে প্রায়শই অভিযান চলত শহরে। কিন্তু তৃণমূলের বোর্ড আসার পর সেরকম অভিযান চোখে পড়েনি। পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার অবশ্য বলছেন, ‘আমাদের ফুড ইনস্পেকটর মাঝেমধ্যেই অভিযান চালান। কড়া ব্যবস্থাও নেওয়া হয়ে থাকে।’ তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে অবশ্য বাস্তবের মিল খুঁজে পাচ্ছে না বিরোধীরা।
অলিগলিতে ঘুরলেই নজরে পড়ে বিরিয়ানির দোকান। শহর ও শহরতলি ঘুরলে শুধু বিরিয়ানির দোকানই নজরে পড়বে শয়ে-শয়ে। এর বাইরে ফাস্ট ফুডের দোকান তো রয়েইছে। অধিকাংশ জায়গাতেই শুধু ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ। তাছাড়া কোথাও কোথাও যথেচ্ছভাবে ফুড কালার ব্যবহারের অভিযোগও উঠছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দপ্তরের দার্জিলিংয়ের ফুড সেফটি আধিকারিক বিজয় কুমাইয়ের দাবি, ‘চলতি সপ্তাহে শিলিগুড়ির ১২টি দোকান থেকে বিরিয়ানির নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সেগুলির মান সম্পর্কে কিছু বলা যাবে না। জেলাজুড়ে আমাদের টিম ঘুরে বেড়াচ্ছে। খাবারের দোকানে যাতে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা হয়, তা নিয়ে আমরা সতর্কবার্তা দিয়েছি। তাতে অনেকটা কাজ হচ্ছে।’
শিলিগুড়িতে যে বিরিয়ানির দোকানগুলি চলছে, সেগুলির অধিকাংশই বিহার থেকে আসা কিছু মানুষ চালাচ্ছেন। এক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নামী বিরিয়ানির ব্র্যান্ডের নামের সঙ্গে কিছুটা বিশেষণ ব্যবহার করে নতুন নাম দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জুড়ে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ কিছু জায়গার নাম। শিলিগুড়ি লেকটাউন এলাকার একটি দোকান থেকে প্রায়শই বিরিয়ানি কেনেন বাবুপাড়ার বাসিন্দা সুরজিৎ মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘গত কয়েক বছরে বিরিয়ানির প্রতি মানুষের আকর্ষণ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া খুললেই দেখি বিরিয়ানি নিয়ে ভ্লগের ছড়াছড়ি। পরিবারের সদস্যরা বায়না করে সেই কারণে মাঝেমধ্যে কিনতে আসি। তবে কতটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেগুলি তৈরি করা হয় তা জানা নেই।’
সেই দোকানের আরেক খদ্দেরের কথায়, ‘বিরিয়ানি এক প্লেট নিয়ে খেতে বসেছিলাম। কিন্তু এত বেশি তেল ছিল যে হাত চপচপ করছিল। খেতে না পেরে গোটা প্লেট ছেড়ে দিয়ে উঠে পড়ি।’
চম্পাসারি মোড়ের কাছে নিবেদিতা রোডের ওপর বিরিয়ানির দোকান রয়েছে নুর হোসেন, মহম্মদ সাব্বিরদের। তাঁদের কথায়, ‘নিয়মিত মুরগি ও খাসির মাংস কিনতে হয়। বিরিয়ানির পাশাপাশি আলাদা করে মাংসের পদ বানাই। সবই বিক্রি হয়ে যায়। অন্য কোনও দোকানে খারাপ মানের মাংস বিক্রি হয় কি না জানি না।’
হায়দরপাড়ার বিরিয়ানি ব্যবসায়ী তমাল মাইতি অবশ্য অভিযানের পক্ষে। তিনি বলছেন, ‘স্বাস্থ্য দপ্তরের নিয়মিত অভিযান করা উচিত। তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মানতে সকলে বাধ্য থাকবেন।’
মানিকচক: আম কুড়াতে ব্যাগ হাতে বাগানের দিকে দৌড় মেরেছিল অমিত। তবে আম কুড়িয়ে আর বাড়ি…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলাদেশের জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতায় খেলতে খেলতেই লুটিয়ে পড়েন গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান।…
মানিকচকঃ প্রায় তিন কিলোমিটার বাঁধহীন অবস্থায় ভূতনির বিস্তীর্ণ এলাকা। আতঙ্কে দিন কাটছে বাসিন্দাদের। প্রশাসনের উপর…
রাজগঞ্জঃ বিজেপি নেতার রিসর্ট ভাঙতে এসে ভেঙে দিয়ে গেল তৃণমূল নেতার খামারবাড়ি। এই ঘটনায় শুক্রবার…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: তেলেভাজা ছাড়া কি আর বৃষ্টির দুপুর বা সন্ধ্যা জমে? চপ-কাটলেট-পিঁয়াজি-পকোড়া ভালোবাসেন…
ইসলামপুর: চোপড়া-ইসলামপুরে (Islampur) সালিশি সভা বসিয়ে তোলা আদায় চক্রের আরও এক পান্ডা খালেককে গ্রেপ্তার করল…
This website uses cookies.