ভাস্কর শর্মা, ফালাকাটা: ফালাকাটার যানজট কমাতে টোটো নিয়ে পদক্ষেপ করেছিল পুরসভা। এরফলে শহরের টোটোগুলির রেজিস্ট্রেশন দেয় পুরসভা। কিন্তু অভিযোগ, এই মুহূর্তে শহরে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত টোটোর চেয়ে রেজিস্ট্রেশন বিহীন টোটো বেশি চলাচল করছে।
পুরসভা যে উদ্দেশ্য নিয়ে টোটোর রেজিস্ট্রেশন দিয়েছিল, তা কার্যকর হচ্ছে না বলে নাগরিকদের অভিযোগ। পুরসভার নির্দেশ না মেনেই শহরজুড়ে বেড়েই চলছে টোটোর দাপট। পুজোর আগে টোটো নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন নাগরিকদের একাংশ। পাশাপাশি শহরে রেজিস্ট্রেশন বিহীন টোটো চলাচল বন্ধের আর্জিও তুলেছে বিভিন্ন মহল। শহরের বাসিন্দা আনন্দ পালের কথায়, ‘শহরের এখন এমন অবস্থা যে মানুষের তুলনায় যেন টোটোর সংখ্যাই বেশি। মেইন রোড বাদেও সার্ভিস রোডেও টোটোর জন্য যাতায়াত করা যায় না।’
ফালাকাটা পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ মুহুরি বলেন, ‘শহরের টোটো নিয়ন্ত্রণের জন্যই রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হয়। আমরা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টোটোর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ করার অনুরোধ করব ট্রাফিক পুলিশকে।’
ফালাকাটা ট্রাফিক ওসি সাদিকুর রহমান জানান, থানার আইসির নির্দেশে ইতিমধ্যেই শহরে টোটো নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করা হয়েছে। দিনকয়েকের মধ্যেই টোটো ইউনিয়ন ও পুরসভার সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
ফালাকাটা পুরসভা সূত্রে খবর, শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে প্রায় সাতশো টোটোকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করে পুরসভা। পাশাপাশি চালকদের সচিত্র পরিচয়পত্রও দেয় পুরসভা। কিন্তু পুরসভার এই উদ্যোগের পরেও যানজট কমেনি শহরে। উলটে রেজিস্ট্রেশন ও রেজিস্ট্রেশন হীন টোটোচালকদের দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। শহরে রেজিস্ট্রেশন যুক্ত সাড়ে ছয়শোর মতো টোটো চললেও তার তিনগুণ রেজিস্ট্রেশন হীন টোটো চলছে। এইসব টোটোর একটা বড় অংশ আসছে গ্রামীণ এলাকা থেকে। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী ব্লকগুলি থেকেও ফালাকাটা শহরে টোটো ঢুকছে। এই মুহূর্তে প্রায় ৫ হাজার টোটোর যানজটে হাঁসফাঁস অবস্থা শহরের।
সামনে পুজো। তাই বাড়তি আয়ের আশায় অনেক শিক্ষিত তরুণও টোটো কিনে চালাচ্ছেন। শহরের ব্যস্ততম রাস্তা নেতাজি রোড এবং মেইন রোডে টোটোর ভিড়ে যাতায়াত করাই দায় হয়ে পড়েছে। অভিযোগ, টোটোগুলি শহরের উপর দিয়ে যাওয়া ১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরেও চলাচল করছে। ফলে বড় গাড়ির সঙ্গে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। এমনকি যাত্রীরাও জখম হচ্ছেন। শহরের গৃহবধূ মাধবী রায় বলেন, ‘শহরজুড়ে টোটোগুলি এমনভাবে দাঁড়িয়ে থাকে যে সাধারণ মানুষ হেঁটেও চলাচল করতে সমস্যায় পড়ছে। আবার অনেক নাবালক, মদ্যপকেও টোটো চালাতে দেখা যাচ্ছে। ভুল করে কেউ এদের টোটোতে উঠলে কোনও বড় ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা পুরসভার কাছে দ্রুত টোটো-দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণের দাবি করছি।’
ফালাকাটা শহরের তৃণমূলের টোটো ইউনিয়নের নেতা অশোক সাহা বলেন, ‘পুরসভা টোটোর রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে। কিন্তু টোটোর চাই স্ট্যান্ড। এছাড়াও চাই গ্রামের টোটো নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ। তবেই শহর যানজটমুক্ত হবে। পুরসভা ও পুলিশ আমাদের সহযোগিতা চাইলে আমরা অবশ্যই তাদের ডাকে সাড়া দেব।’