শুভদীপ শর্মা, ময়নাগুড়ি: কোথাও বাঁধ কেটে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। আবার কোথাও বাঁধ গর্ত করে গোবর জমিয়ে রাখা হয়েছে। রেইনকাটে দোমোহনিতে তিস্তার মূল বাঁধের দশা খুবই খারাপ। দ্রুত বাঁধের সংস্কার না হলে ময়নাগুড়ির (Mainaguri) বিস্তীর্ণ এলাকায় হতে পারে বন্যা। অন্যদিকে, বাঁধের ওপরের ক্রান্তিগামী রাস্তাতেও তৈরি হয়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। সেচ দপ্তরের আধিকারিক সমীর বর্মন বললেন, ‘বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলি চিহ্নিতকরণ করা হয়েছে। তবে আতঙ্কের কিছু নেই। মূল বাঁধকে রক্ষার জন্য সবরকমের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমোহনির পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে তিস্তা নদী। নদী থেকে জনপদকে বাঁচাতে তৈরি হয় তিস্তার মূল বাঁধ। দোমোহনি কালী মন্দিরের পাশ থেকে এই বাঁধের ওপর দিয়ে যাওয়া রাস্তা দোমোহনি, ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ির সঙ্গে ক্রান্তি, চাঁপাডাঙ্গার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। প্রতিদিন এই বাঁধের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছেন হাজার হাজার মানুষ এবং গাড়ি। গবাদিপশুও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এই বাঁধের রাস্তা দিয়ে।
বর্তমানে সেখানে দেখা যাচ্ছে বাঁধের একাংশ কেটে স্থানীয়রা বর্মনপাড়ায় যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করেছেন। রেইনকাট এবং বাসিন্দাদের এই কাজে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে মূল বাঁধটির। গাড়িচালক রাজু রাও বললেন, ‘এখনই বাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি মেরামত না করলে যে কোনও সময় তিস্তার জল বাঁধ ভেঙে দোমোহনিতে ঢুকতে পারে। প্রশাসনের উচিত বিষয়টি নিয়ে ভাবা।’
বহু যাত্রীবাহী গাড়ি ছাড়াও অ্যাম্বুল্যান্সও ওই পথ দিেয় চলাচল করে। এদিকে, রেইনকাটগুলো সবসময় ঠাহর করতে পারেন না গাড়িচালকরা। ফলে বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা সবসময়ই থাকছে বলে জানালেন স্থানীয় শান্তু সরকার, মিঠু রহমানরা।
ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান মধুসূদন কর্মকারের মুখেও শোনা গেল আশঙ্কার সুর। তিিন জানান, বাঁধ দিয়ে সামান্যতম জল ঢুকলেও তার পরিণতি হবে ভয়ংকর। বাঁধটির বেহাল দশার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শুক্লা দত্ত রায়ও। তাঁর কথায়, ‘সেচ দপ্তরকে বাঁধটি মেরামতের কথা জানানো হয়েছে। পাশাপাশি কোনও গ্রামবাসী যদি বাঁধের কোনও ক্ষতি করে থাকেন, সেটিও দেখা হবে।’
সেচ দপ্তরের আধিকারিক তো আশ্বাস দিলেন পদক্ষেপ করার, কতদিনে তা বাস্তবায়িত হয়, সেটাই দেখার।