হরিশ্চন্দ্রপুর: পঞ্চায়েত ভোটের পরেই দলীয় বৈঠকে শাসক দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল। এদিন বৈঠকে ধস্তাধস্তিতে জড়াল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হলেন। এই নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল চাঁচল বিধানসভার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পেমা কালীবাড়ি এলাকায় তৃণমূলের দলীয় বৈঠকে।
জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটে হরিশ্চন্দ্রপুর-১(বি) ব্লকের তুলসীহাটা, কুশিদা, রশিদাবাদ ও বরুই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাত ছাড়া হয়েছে। ব্লক সভাপতি মানিক দাস টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের টিকিট দিয়েছিলেন বলেই এই ভরাডুবি বলে অভিযোগ দলের একাংশের। সভাপতি মানিক দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তৃণমূলের একাংশ। দলের অপর গোষ্ঠীর দাবি, একজন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে বারবার কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে তৃণমূলের একাংশ। এই নিয়ে এদিন ওই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েত মেম্বার ও তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে দলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন ওই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতিরা। মিটিং চলাকালীন বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পেমা ৪০ নম্বর বুথের সদস্যা রুমা পারভিনের স্বামী নুর আজম বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি মিন্টু আলমকে অভিযোগ করে বলেন অঞ্চল চেয়ারম্যান একরামুল হককে এই মিটিংয়ে ডাকা হয়নি কেন? এর জবাব চাইতে গিয়েই অঞ্চল সভাপতি ও অঞ্চল চেয়ারম্যানের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এরপর চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শেষমেষ মিটিং বাতিল করতে বাধ্য হন দলীয় নেতৃত্ব।
তবে অঞ্চল সভাপতি মিন্টু আলম অভিযোগ করে বলেন, অঞ্চল চেয়ারম্যান একরামুল হক দল বিরোধী কর্মীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ব্লক সভাপতি মানিক দাসের বিরুদ্ধে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। যার প্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে। দলের সংগঠনকে ভাঙার চক্রান্ত করছে সে। তাই ওকে এই মিটিংয়ে ডাকা হয়নি। অপরদিকে অঞ্চল চেয়ারম্যান একরামুল হক জানান, ২০০৮ সাল থেকে সে তৃণমূল করে আসছে। তিলে তিলে দলটিকে নিজের হাতে গড়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে দল ভাঙার মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ব্লক সভাপতি মানিক দাস জানান, যারা এই ধরনের বিক্ষোভ ও অশান্তি তৈরি করার চেষ্টা করছে এরা দলের কেউ নন। এরা বিগত পঞ্চায়েতে জোটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এলাকায় দালালি করেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন দুর্নীতিতে যুক্ত রয়েছে।