মানিকচক: মালদায় ভোট পরবর্তী হিংসার বলি কংগ্রেস কর্মী। গোপালপুরে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে খুনের বদলা খুন। লোকসভা ভোটে তৃণমূলের খারাপ ফলের বদলা নিতেই কংগ্রেস কর্মীকে খুন করল তৃণমূল বলে অভিযোগ। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে ওই কংগ্রেস কর্মীকে। অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। মৃত মালদার মানিকচক ব্লকের গোপালপুর অঞ্চলের জেসারতলা এলাকার কংগ্রেস কর্মী আকমাল শেখ(২২)। যদিও তৃণমূল এই ঘটনাকে নিছকই পারিবারিক ঝামেলা বলে দাবি করেছে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনীর চাকরি পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করে ধরমপুর স্ট্যান্ড থেকে বাইকে করে কংগ্রেস কর্মী আকমল শেখ ও তার সঙ্গী গোপালপুরের জেসারত টোলায় নিজের বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তার মাঝে ফাঁকা আম বাগানে তৃণমূল আশ্রিত বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁদের আটকে রাস্তা থেকে ভেতরে নিয়ে যায়। বাইক চালককে মারধর করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু কংগ্রেস কর্মী আকমাল শেখকে আম বাগানের ভেতরে নিয়ে গিয়ে প্রথমে শাবল দিয়ে পায়ে আঘাত করে পরে হাঁসুয়া দিয়ে নৃশংসভাবে কোপায়। ঘটনার খবর এলাকায় চাউর হতে লোকজন দুষ্কৃতীদের ধাওয়া করে। দুষ্কৃতীরা তখন এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি আকমালকে উদ্ধার করে মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
আকমল শেখের বাবা বলেন, ‘ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি পরীক্ষার জন্য ফর্ম ফিলাপ করে বাড়ি ফিরছিল। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছে। এই সব কিছু হয়েছে গোপালপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মহম্মদ নাসিরের নেতৃত্বে। লোকসভা ভোটে তৃণমূল খারাপ ফল করায় আমাদের খুন করে বদলা নিচ্ছে।’
স্থানীয় কংগ্রেস নেতা শেখ সাইফুদ্দিনের অভিযোগ, ‘পুলিশ ও তৃণমূলের যোগসাজশে এই ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েত ভোট থেকে কংগ্রেস কর্মীদের তৃণমূলের হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গোপালপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মোহাম্মদ নাসিরের নেতৃত্বে এই খুন হয়েছে। আমাদের এই বুথ থেকে লিড নিতে পারেনি বলে খুন করে বদলা নিচ্ছে তৃণমূল। অথচ পুলিশ নিশ্চুপ।’ তৃণমূল নেতা মোহাম্মদ নাসিরের সাফাই, ‘এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের বা তৃণমূলের কোন যোগাযোগ নেই। ঘটনা খুবই দুঃখজনক। পুলিশকে বলবো সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হোক। কংগ্রেসের সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন।’