জলপাইগুড়ি ব্যুরো: হাতির হানা(Elephant Attack) থামার যেন কোনও লক্ষণই নেই। সোমবার রাতেও একাধিক বাড়িঘর সহ সুপারি গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হল জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) জেলার বিভিন্ন এলাকায়। সন্ধে নামলেই এখন হাতির ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।
সোমবার গভীর রাতে বামনডাঙ্গা চা বাগানের ডায়না লাইনে একপাল বুনো হাতি ঢুকে একে একে ভেঙে দেয় নিতা মিঞ্জ সহ আরও এক বাসিন্দার দোকান। পাশাপাশি সেখানে অন্তত ১০০টি সুপারি গাছ তছনছ করে দেয় বুনোদের দলটি। এই ঘটনায় ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাসিন্দারা চিৎকার চ্যাঁচামেচি শুরু করলে হাতির দলটি ফের জঙ্গলে ফিরে যায়। খবর পেয়ে এদিন বনকর্মীরা এসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে যান। অন্যদিকে, নিউ খুনিয়াবস্তির ১৪২ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে হামলার ঘটনাটি ঘটে ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ। লাগোয়া পানঝোরার জঙ্গল থেকে একটি দলছুট দাঁতাল এসে সেখানে গণেশ ছেত্রী ও গোবিন ছেত্রী নামে দুই বাসিন্দার দোকানঘরও ভেঙে দেয়। গ্রামের ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে এর আগেও হাতির হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
মেটেলি ব্লকের গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া দক্ষিণ ধূপঝোরা এলাকার একটি বেসরকারি রিসর্টেও এদিন হাতির হামলার ঘটনা ঘটে। হাতির হানায় রিসর্টটির দেওয়াল ভেঙে একটি বাথরুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কোনও পর্যটক না থাকায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। রিসর্টের কর্মীদের চিৎকার চ্যাঁচামেচিতে প্রায় আধঘণ্টা পর হাতিটি সেখান থেকে চলে যায়।
অন্যদিকে, রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদারি গ্রাম পঞ্চায়েতের মেইনঘোরা গ্রামেও হাতির হানার ঘটনা ঘটে। সোমবার গভীর রাতে তিন থেকে চারটি হাতির একটি দল ওই এলাকায় ঢুকে একটি বাড়িতে হামলা চালায়। হামলার জেরে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বাড়িটির সীমানা প্রাচীর সহ রান্নাঘর ও একটি শোয়ার ঘর। তবে এদিন বাড়িতে কেউ না থাকায় কেউ আহত হননি। ভোরের দিকে প্রতিবেশীর কাছ থেকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে সেখানে শিলিগুড়ি থেকে বাড়িতে যান পরিবারের সদস্যা শিবানী রায় বর্মন। তিনি বলেন, ‘ভাগ্যিস এদিন রাতে বাড়িতে কেউ ছিলাম না। তাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছি। তবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ভালোই।’ এবিষয়ে আমবাড়ি রেঞ্জের আধিকারিক শ্যামাপ্রসাদ চাকলাদার বলেন, ‘হাতির দলটির গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। লোকালয়ে হাতির দল ঢুকে পড়ার আগেই তাদের যাতে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’