আলিপুরদুয়ার: সোমবার ডুয়ার্স উৎসবে বাংলাদেশের স্টলের দেখা মেলায় বির্তক ছড়িয়েছে। ওই স্টলে শীতের রেডিমেড পোশাক ও নোনা ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছিল। বাংলাদেশের উত্তাল পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এ দেশের সঙ্গে যুদ্ধ-জিগির তুলেছে বাংলাদেশ। এই অবস্থায় বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য বিক্রি বন্ধ রয়েছে রাজ্যের বেশ কিছু উৎসবে। বাংলাদেশ থেকে শাড়ি, গুড়, নোনা ইলিশ নিয়ে এই শীতে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ভারতে আসেন বিভিন্ন মেলায় দোকান দিতে। তবে এবছর সেই ছবি দেখা যাচ্ছে না। সম্প্রতি কোচবিহার রাসমেলা কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছিল মেলায় বাংলাদেশের কোনও স্টল থাকবে না। একইভাবে ডুয়ার্স উৎসব কমিটিও একই ঘোষণা করেছিল। কিন্তু তরপরেও এদিন বাংলাদেশের স্টলের বিষয়টি নজরে আসতেই হইচই শুরু হয়ে যায়। তবে খোঁজখবর পড়তেই আচমকা বন্ধ হয়ে যায় স্টলটি। বিকেলের পর আর স্টল খোলেনি।
স্টলে থাকা সুনীতা গোমেস নামে প্রবীণ মহিলা জানিয়েছেন, তিনি কলকাতা থেকে এসেছেন। তবে তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকার মহম্মদপুরে। তিনি কোচবিহার রাসমেলাতেও স্টল দিয়েছিলেন। তবে তিনি বর্তমানে কি এই রাজ্যের বাসিন্দা? নাকি ভিসায় এসেছেন সেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়নি। এই ব্যাপারে বিষয়টি জানার চেষ্টা করা হলেও মহিলা কোনও কথা বলতে চাননি। এমনকি তড়িঘড়ি স্টল বন্ধ করে দিয়েছেন। রাত পর্যন্ত ওই স্টল খোলেনি। নোনা ইলিশ যে বাংলাদেশ থেকে এসেছে সেটা মেনে নিয়েছেন ওই প্রবীণা। তিনি জানিয়েছেন, ২০০ পিস নোনা ইলিশ নিয়ে তিনি ডুয়ার্স উৎসবে এসেছিলেন। শনিবার তাঁর স্টল থেকে ৩০টি ইলিশ বিক্রি হয়েছে।
সুনীতার স্টল নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে ডুয়ার্স উৎসব কমিটিকে। কমিটির তরফে সন্ধ্যায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্টল বন্ধ করে দিতে হবে। ডুয়ার্স উৎসব কমিটির সম্পাদক অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘ওই মহিলা জানিয়েছিলেন তিনি কলকাতা থেকে এসেছেন। রাসমেলাতেও স্টল দিয়েছেন। আমরা জানতাম না উনি বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। স্টল বন্ধ করতে বলা হয়েছে।’ উৎসব কমিটি জানিয়েছে, এতদিন স্টল ভাড়া দেওয়ার সময় কারও আধার কার্ডের প্রতিলিপি নেওয়া হত না। তবে আগামী বছর থেকে এইরকম কোনও ঘটনা এড়ানোর জন্য সেটা নেওয়া হবে।
যদি ওই মহিলা সত্যিই বাংলাদেশ থেকে এসে থাকেন তবে ডুয়ার্স উৎসব কমিটির পাশাপাশি রাসমেলা কমিটিরও ব্যর্থতা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এর আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল বাংলাদেশের কোনও স্টল থাকবে না। তারপরেও একজন এতবড় পরিকাঠামোর মাঝে স্টল খুলে কী করে ব্যবসা করলেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ওই মহিলা যে স্টল দিয়েছেন সেটাও অন্য স্টলের থেকে অন্যরকম।
কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ডুয়ার্স উৎসবের ৩০ নম্বর স্টলে তিনি কাপড় বিক্রি করেছেন। পাশে একটা ছোট টেবিলে কিছু নোনা ইলিশ সাজিয়ে রেখেছিলেন। সেগুলিও বিক্রি হয়েছে। অন্য স্টলগুলোর বাইরে যেমন বড় বড় পোস্টার লাগানো ছিল। কিন্তু ওই স্টলে কোনও পোস্টার ছিল না। সব মিলিয়ে স্টল নিয়ে যখন বিতর্ক ছড়িয়েছে তখন স্টলে থাকা মহিলা আচমকা তা বন্ধ করে দেওয়ায় আরও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।