মহম্মদ হাসিম, নকশালবাড়ি: সালটা ২০২৩। সেপ্টেম্বর মাস। মালদার গাজোলে একটি দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে গিয়ে সরকারি আধিকারিক, শাসকদলের স্থানীয় নেতার প্যান্ডেল দেখে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন। নীল-সাদার বদলে গেরুয়া! বিতর্ক হতেই তড়িঘড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয় ক্যাম্প। কাট টু ২০২৫। ফেব্রুয়ারি মাস। গাজোল থেকে প্রায় ২১০ কিলোমিটার দূরে নকশালবাড়িতে ফের রং নিয়ে বিতর্ক। তবে কোনও সরকারি ক্যাম্পে নয়, খোদ নকশালবাড়ি (Naxalbari) পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে নীল-সাদার বদলে তুঁতে রং করা হয়েছে। যা নিয়ে শাসকদলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের রং নীল-সাদা। সরকারি অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল হোক কিংবা দপ্তর-অফিস, সবেতেই চোখে পড়বে নীল-সাদা রং। কিন্তু ‘প্রথা’ ভেঙে বিডিও অফিসের পাশে থাকা পঞ্চায়েত সমিতির কার্যালয়ে তুঁতে রং করা হল কেন? এ ব্যাপারে নাকি কিছুই জানেন না পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আসরফ আনসারি। তঁার বক্তব্য, ‘আমি গত ১০ দিনের বেশি সময় ধরে অফিস যাইনি। সরকারি ভবন অবশ্যই নীল-সাদা রং করা দরকার। এজেন্সি কার কথা শুনে কী রং করেছে আমি বলতে পারব না। সোমবার অফিসে গিয়ে গোটা বিষয়টা খোঁজ নিয়ে দেখব।’
পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ যখন এই কথা বলছেন, তখন পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পৃথ্বীশ রায় বিষয়টিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তঁার কথায়, ‘নকশালবাড়ি থানা থেকে বিডিও অফিস সব জায়গায় নীল-সাদা রং করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ভবনটিও নীল-সাদা রং করা উচিত ছিল। অন্য রং মেনে নেওয়া যায় না।’ প্রতিক্রিয়া জানতে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আনন্দ ঘোষকে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তঁার ফোন বন্ধ থাকায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানা গিয়েছে, গত এক মাসের বেশি সময় ধরে ওই কার্যালয় মেরামত হয়েছে। আগেও ওই ভবনের তুঁতে রং ছিল। কাজ শেষে দেখা যায় ফের গোটা ভবনে ওই রংটাই করা হয়েছে। প্রশ্ন ওঠে, সমিতির কেউ বিষয়টি টের পাননি? মালদার গাজোলে যে এলাকায় বিতর্ক হয়েছিল, সেটি আলাল গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। তাই সেখানে গেরুয়া প্যান্ডেল, তাও একটা ব্যাখ্যা খাড়া করা গিয়েছিল। কিন্তু নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতায় ঘাসফুল শিবির। তারপরেও নীল-সাদা রং না হওয়ায় বিতর্কটা আগামীদিনে বাড়বে বই কমবে না।