মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫

Cooch Behar | যান্ত্রিক সমস্যায় ধুঁকছে প্রকল্প! নেপথ্যে কোন কারণ?

শেষ আপডেট:

নয়ারহাট: বছর দেড়েক হল মাথাভাঙ্গা-১ ব্লকের হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমবাড়িতে চালু হয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প। কিন্তু যান্ত্রিক কারণে এই প্রকল্প ধুঁকছে বলে অভিযোগ। প্রকল্প শুরুর সময়ই বসানো হয়েছিল শ্রেডিং মেশিন। তবে সেটির কার্যক্ষমতা কম থাকায় তা আর চালানো হয় না।

বর্তমানে সেখানে বেইলিং মেশিনের সাহায্যে চাপ দিয়ে প্লাস্টিক বর্জ্য পেস্টিং করে বাইরে পাঠানো হয়। তবে সেই বেইলিং মেশিনেরও কার্যক্ষমতা কম। ফলে পেস্টিংয়ের কাজে আশানুরূপ লাভ হচ্ছে না। এই শ্রেডিং ও বেইলিং মেশিনের সমস্যার বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনা হলেও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। এতে প্রকল্পের মজুরদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়েছে। কারখানার সুপারভাইজার মনোহর হোসেনের পরিষ্কার বক্তব্য, দ্রুত মেশিন দুটি পালটানো না হলে তিনি কাজ ছেড়ে দেবেন।

প্রকল্পটি বন্ধ হলে এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অন্তত জনা চল্লিশেক কর্মী কাজ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কাও ছড়িয়েছে। হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাসিম আলি বলেন, ‘দ্রুত আধুনিক যন্ত্র বসানো না হলে প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়বে। ফলে প্রকল্পের সঙ্গে যুক্তরা কাজ হারাবেন।’ নতুন যন্ত্র বসিয়ে প্রকল্পটির আধুনিকীকরণ করা হলে অদূরভবিষ্যতে আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে অনেকের আশা। এদিকে, কারখানায় যাতায়াতের জন্য এতদিনেও উপযুক্ত সংযোগকারী রাস্তা তৈরি হয়নি। তাই প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তবে মাথাভাঙ্গা-১’এর বিডিও শুভজিৎ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘কারখানায় নতুন যন্ত্র বসানোর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে। আশা করছি সাড়া মিলবে।’ বিডিও’র সংযোজন, সংযোগ রাস্তা তৈরির বিষয়টি পঞ্চায়েত সমিতির বাজেটে ধরা হয়েছে। অর্থবরাদ্দ হলেই কাজ হবে।

প্লাস্টিক বর্জ্য প্রকল্পে কাজ করে উপার্জন করছেন অর্চনা শীল, গীতা দে, লক্ষ্মী সরকার, রিনা বিশ্বাসের মতো স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। বর্তমানে আটজন মহিলা সহ মোট ১৫ জন প্লাস্টিক বর্জ্য ঝাড়াই বাছাইয়ের কাজ করছেন। প্লাস্টিক বর্জ্য সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন আরও অন্তত ২৫ জন। আর্থিকভাবে স্বনির্ভরও হচ্ছেন তাঁরা। বর্জ্য বাছাইয়ের সঙ্গে যুক্ত গীতা দে বলেন, ‘এখানে নিয়মিত কাজ করে যে টাকা পাই তা সংসারের কাজে লাগাই। প্রকল্পটি ভালো করে চললে আরও অনেকে এখানে কাজ পাবেন।’ রিনার কথায়, ‘নিয়মিত উপার্জন হওয়ায় আমার অভাবের সংসারে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলেছে। আমি চাই প্রকল্পটির আরও উন্নতি হোক।’

কোচবিহার জেলা পরিষদের উদ্যোগে আমবাড়িতে সরকারি জমিতে ইউনিটটি গড়ে তোলা হয়েছে। হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের ইউনিটটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার জেলাকে জঞ্জালমুক্ত করতে জেলা পরিষদ যে কয়েকটি পদক্ষেপ করেছে তার মধ্যে এখানকার প্লাস্টিক ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিটটি অন্যতম।

Mistushree Guha
Mistushree Guhahttps://uttarbangasambad.com/
Mistushree Guha is working as Sub Editor. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Online. Mistushree is involved in Copy Editing, Uploading in website.

Share post:

Popular

More like this
Related

Kharibari | তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যদের, বিজেপির মদত, দাবী জেলা সভানেত্রীর   

খড়িবাড়ি: খড়িবাড়ির বিন্নাবাড়িতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল চরমে। একমাস যেতে...

Dinhata | দিনের আলোয় ডোবা ভরাট! নীরব প্রশাসন

দিনহাটা: গত এক সপ্তাহ ধরে দিনের আলোয় ভরাট করা...

Cooch Behar | সিঁদুর পরার ধরনে বদল! কী বলছেন আধুনিকা নারীরা?

কোচবিহার: আগে ঘরে-বাইরে বিবাহিত মেয়েদের কপালে সিঁদুরের টিপ আর...

Balurghat | পাইপলাইন জোড়ার আঠা দিয়ে কৃষ্ণের মূর্তি

পঙ্কজ মহন্ত, বালুরঘাট: মাটি দিয়ে মূর্তি তৈরির কথা সকলের...